জাতীয়

শবে বরাত উপলক্ষে সকাল থেকেই মৌসুমী ভিখারিদের ভিড়!

সকাল ১০টা। আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের গেটের অদূরে রাস্তায় প্রখর রোদের মধ্যে বসে আছেন আনুমানিক ৫০/৫৫ বছর বয়সী এক নারী। তার শরীর বেয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে। পথচারী কেউ সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেই হাত বাড়িয়ে সাহায্য চাইছেন। অধিকাংশই হেঁটে চলে গেলেও কেউ কেউ থমকে দাঁড়িয়ে দু-চার টাকা সাহায্য করছেন। ওই নারীর আশেপাশে তার মতোই আরও অনেকে বসে সাহায্য চাইছেন। তাদের কেউ বৃদ্ধ, কেউ পঙ্গু আবার কেউবা ছোট্ট শিশু কোলে দাঁড়িয়ে সাহায্যে পাওয়ার আশায় হাত পাতছেন।

Advertisement

বৃদ্ধা নারীর নাম সালমা বেগম। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে নরসিংদীর ঘোড়াশাল থেকে ট্রেনে করে কমলাপুর নেমে হেঁটে আজিমপুর কবরস্থান গেটে আসেন। রাতে রাস্তাতেই ঘুমান তিনি। সকালে উঠে রাস্তাতেই বসে পড়েন। কড়া রোদের মাঝে কেন বসে আছেন- জানতে চাইলে সালমা বেগম জানান, আজ দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত। এদিন কবরস্থানে বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে অনেকেই ছুটে আসেন। এদিন মানুষ দুহাত খুলে দান করেন। তাই আগে থেকেই জায়গা নিয়ে বসেছেন তিনি।

সালমা বেগম বলেন, ‘আগে থেকে জায়গামতো না বইতে পারলে ট্যাকা কম পাওয়া যায়। এ কারণেই রোদে পুইড়া এহানে বইসা আছি।’

রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে সরেজমিন আজিমপুর কবরস্থানের উত্তর ও দক্ষিণ গেট ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আবালবৃদ্ধবনিতা সব বয়সের মৌসুমী ভিখারিরা ছুটে আসছেন।

Advertisement

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে উপস্থিত ভিখারিদের কয়েকজন জানান, প্রতিবছর শবে বরাতের রাতে হালুয়া-রুটি সংগ্রহ ও দান খয়রাতের টাকা সাহায্য পেতে ছুটে আসেন। কেউ কেউ তাদের এক-দুদিনের জন্য চুক্তিতে নিয়ে আসেন। যাতায়াত ও খাবার খরচ বাদ দিয়ে এক-দুই হাজার টাকা দেন। তবে শবে বরাতের রাতে একেকজন ৪/৫ হাজার টাকা সাহায্য পান বলে জানান তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের দক্ষিণ গেটে শবে বরাতের রাতে আগত মুসল্লিদের ওজু ও খাবারের পানির ড্রাম রাখা হচ্ছে। মসজিদে দান-খয়রাতের জন্য স্টল নির্মাণ করা হচ্ছে। সকালে খুব বেশি মৌসুমী ভিখারি না থাকলেও বেলা যত গড়াবে ভিড় তত বাড়বে বলে জানা গেছে।

এমইউ/এমবিআর/জেআইএম

Advertisement