খেলাধুলা

‘বাসের মধ্যে ছেলেদের কয়েকজন কান্না করছিল’

নৃশংস এক হত্যাকাণ্ডের মুখ থেকে বেঁচে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ৩-৪ মিনিট আগে মসজিদে পৌঁছলেই হয়তো দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে যেত। এমনকি বাসের মধ্যে বসে থাকলেও বিপদ ঘটতে পারতো। ভিডিওতে দেখা যায়, বন্দুকধারী মসজিদের বাইরে এসেও গুলি করেছে কয়েক দফা।

Advertisement

তবে পরম করুণাময় সৃষ্টাকর্তার ইচ্ছায় বেঁচে গেছেন তামিম, মুশফিক, মিরাজরা। কিন্তু ওই ঘটনার সময়টা কেমন কেটেছে, সেটা শুধু তারাই বলতে পারবেন। মসজিদের খুব কাছেই ছিল টাইগার দলের বাস। ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলটের বর্ণনামতে, প্রথমে বাসের মধ্যে মাথা নিচু করে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিভাবে বের হবেন ভেবে অনেকে কাঁদছিলেন।

কিন্তু পরে তারা বুঝতে পারেন, এখানেও ঝুঁকি আছে। তাই বুদ্ধি করে পেছনের দরজা দিয়ে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসে পুরো দল। খালেদ মাসুদ ওই ঘটনার বর্ণনার এক পর্যায়ে জানান, ‘আমরা খুবই কাছে ছিলাম। আমার মনে হয় যেনো মসজিদটা আমাদের চোখের সামনেই ছিল। বাস থেকে আমরা পরিষ্কার দেখছিলাম। খুব বেশি হলে হয়তো ৫০ গজ দূরে ছিলাম।

যেটা বললাম, আমরা খুব ভাগ্যবান। আর যদি ৩-৪ মিনিট আগে চলে আসতাম তাহলে হয়তো বড়সড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেত। আমি শুকরিয়া আদায় করতে চাই যে এমন কিছু ঘটেনি।

Advertisement

আমরা ভাগ্যবান যে সেখানে ছিলাম না। মনে হচ্ছিলো যেন ম্যুভিতে যেমন দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় মানুষ বের হয়ে আসছে। বেশ কয়েকজন মানুষ বের হতে পেরেছিল।

বাসের মধ্যে থাকা ছেলেদের মধ্যে কয়েকজন কান্না করছিল। কারণ সবাই উদ্বিগ্ন ছিল, কিভাবে এখান থেকে বের হতে হবে।

আমরা প্রায় ৮-১০ মিনিট ওভাবেই মাথা নিচু করে বাসের মধ্যে বসে ছিলাম। যাতে কোনো কারণে যদি গুলি বাসকে লক্ষ্য করেও করা হয়, আমাদের যেনো না লাগে।

পরে যখন বুঝলাম যে অস্ত্রধারীরা যদি বাইরে এসে এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করে, তখন বাসের মধ্যে একসঙ্গে অনেককে পাওয়া যাবে, ঘটনার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে পেছন দিক দিয়ে যে গেট আছে, সবাই গেট দিয়ে বের হয়ে যাবো।

Advertisement

তারপর আপনারা সবাই দেখলেন যে আমরা পার্কের মধ্য দিয়ে হেঁটে-দৌড়িয়ে চলে গেলাম ড্রেসিংরুমের ভেতরে।’

ড্রেসিংরুমে ফেরার পর এই দুঃসহ ঘটনা ভুলতে অন্য কিছু নিয়ে আলাপ করায় মনোনিবেশ করতে চাইছিলেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু ঘুরেফিরে সেই প্রসঙ্গই চলে আসে।

খালেদ মাসুদের ভাষায়, ‘সব খেলোয়াড় একই রুমে একসঙ্গে ছিল। আমরা চেষ্টা করছিলাম, অন্য কিছু নিয়ে আলাপ করে বিষয়টা ভুলে যেতে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সবাই সেই কথাই বলছিল যা তারা দেখেছে। আমরা ভাগ্যবান, যদি দেরি করে বাস থেকে নামতাম কিংবা একটু আগে মসজিদে পৌঁছে যেতাম, তবে খারাপ কিছু হতে পারতো।’

এমএমআর/এমকেএইচ