প্রবাস

ইতালিতে পাসপোর্ট সমস্যায় বাংলাদেশিরা

ইতালির রোম বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিলান কনস্যুলেট জেনারেল অফিসে দুই হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশির পাসপোর্ট আটকা পড়ে আছে। এভাবে পাসপোর্ট আটকা থাকায় দেশটিতে বৈধতা হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন বাংলাদেশিরা।

Advertisement

ইতোমধ্যে পাসপোর্টে নামের ভুল সংশোধনের সমাধান চেয়ে রোম দূতাবাস ও মিলান কনস্যুলেট জেনারেল অফিসে আবেদন করেছে বাংলাদেশিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাসপোর্টে নাম ভুল ছাড়াও তথ্যগত মিল না থাকায় এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বাংলাদেশি প্রবাসীরা। এ ছাড়া জন্ম তারিখে ঝামেলার কারণে নবায়নে দেরি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে আটকে পড়া পাসপোর্টের কোনো সঠিক সমাধান না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বাংলাদেশিরা। নাম ভুলের সমাধান না হলে বৈধতা হারানোর ভয়ে হতাশায় ভুগছেন অনেকে। শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করছেন এসব বাংলাদেশিরা।

এর সমাধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সোহেল হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের কষ্টের কথা লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি একজন ইতালি প্রবাসী, একটি পাসপোর্টের জন্য আমার জীনবটা ধ্বংসের পথে। আমার মতো শত শত, হাজার হাজার প্রবাসী দূতাবাসে গিয়ে দিন শেষে নানা অজুহাতে পাসপোর্ট না পেয়ে খালি হাতে ফেরত আসে।’ ‘আমরা খুবই অসহায়। আপনি দয়া করে আমরা যারা পাসপোর্টের সমস্যায় আছি যে ভুলত্রুটি আছে তা সংশোধন করার সুযোগ দেন। আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাদের শেষ ঠিকানা।’

Advertisement

আরও পড়ুন> ইতালিতে পাসপোর্ট আইন শিথিলের অপেক্ষায় ২ লাখ বাংলাদেশি

সূত্রে জানা যায়, যেসব পাসপোর্ট নবায়ন করতে দেয়া হয়েছে। তাতে বেশির ভাগই তথ্যগত ভুল থাকায় সন্দেহ জনিত কারণে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতরে আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে অনেকে দেশ থেকে যে পাসপোর্ট নিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করেছে। নবায়নের ক্ষেত্রে আগের তথ্যের সঙ্গে গড়মিল রয়েছে।

এরই ফাঁকে তারা ইতালির বৈধতা পেয়ে গেছে। এ ধরনের সমস্যায় থাকা বাংলাদেশিরা জানান, পাসপোর্ট নবায়ন না হলে স্টে-পারমিটও নবায়ন হবে না।

এ ব্যাপারে রোম বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবাহান সিকদার বলেন, ‘কোনো পাসপোর্ট রোম দূতাবাসে আটকে থাকে না। দূতাবাসের কাজ হলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবেদন গ্রহণ করে তা প্রসেসিং করে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদফতরে পাঠানো। এরপর আবেদনকারীর কোনো সমস্যা থাকলে সেখান থেকে পাসপোর্ট আসতে সময় লাগে। সেখানে দূতাবাসের কোনোকিছু করার থাকে না।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘যেসব পাসপোর্ট আটকে আছে তাদের বড় ধরনের তথ্যগত ভুল পাওয়া গেছে। আর যাদের আবেদনে তথ্যে কোনো ভুল নেই তারা দ্রুত পেয়ে যাচ্ছে। এরপরেও দূতাবাস থেকে আটকা পাসপোর্টগুলো দিয়ে দিতে লিখিত এবং মৌখিক আবেদন একাধিক বার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাসপোর্টে ছোটখাটো ভুল হলে সেগুলো আমরা দূতাবাস থেকে সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু বড়ধরনের ভুল হলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’

আরও পড়ুন> ইতালিতে দ্রুত চলছে এমআরপির কাজ

রাষ্ট্রদূত বলেন, সমস্যা সমাধানের বিষয়ে দূতাবাসের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনেক পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে কিন্তু তা ডেলিভারি নিতে আসছে না।’ পাসপোর্ট ডেলিভারির বিষয়ে ঢাকার অধিদফতরে সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আব্দুস সোবাহান সিকদার।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইতালিতে নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন করেছে দেশটির সরকার। নাগরিকত্ব পেতে পূর্বের নিয়ম থেকে আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। সময় বাড়ানোর ফলে একজন বাংলাদেশিকে ইতালিয়ান নাগরিকত্ব পেতে ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে সময় লেগেছে ১২ বছর।

এমআরএম/এমকেএইচ