চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ফারজানা আক্তার সীমা নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে তার সাবেক স্বামী সুমন আলীর (২৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত আলী সোমবার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
Advertisement
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সুমন আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর মিয়া পাড়ার আমির হোসেনের ছেলে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আঞ্জুমান আরা জানান, ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর মিয়াপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মো. সুমন আলীর সঙ্গে চৈতন্যপুর বাজারপাড়ার নূর আলম কাঁচুর মেয়ে ফারজানা আক্তার সীমার বিয়ে হয়। কিছুদিন পর তাদের সংসারে এক ছেলে (সিয়াম) সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সীমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে স্বামী সুমন আলী। এর একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রীর সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ছেলে সিয়াম মায়ের কাছেই থাকে। কিন্তু সিয়ামকে পথঘাটে দেখতে পেলে জোরপূর্বক নিজ হেফাজতে নেয়ার চেষ্টা করে মো. সুমন আলী। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে শত্রুতা তৈরি হয়। এর একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. সুমন আলী তাদের বাড়িতে হাজির হয়ে ফারজানা আকতার সীমাকে ধারাল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। সীমাকে বাঁচাতে গেলে সীমার মা দিলুয়ারা বেগম এবং সীমার ভাই মো. কামরুজ্জামানকেও কুপিয়ে জখম করে সুমন। প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ফারজানা আকতার সীমা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় মা-ছেলের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে সুমন আলীকে আটক করে পুলিশে দেয়।
পরদিন ৮ অক্টোবর নিহত ফারজানা আকতার সীমার ভাই মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে সুমন আলীকে একমাত্র আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন শিবগঞ্জ থানার তৎকালীন পরিদর্শ (তদন্ত) সরোয়ার রহমান। মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আজ এই রায় দেন।
Advertisement
মোহা. আব্দুল্লাহ/আরএআর/এমএস