রাজনীতি

‘নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধি রাখা সম্ভব’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, টেকনোক্র্যাট হিসেবে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধি রাখা সম্ভব।

Advertisement

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা আছে একদিনেই তার সব কয়টিতে জামিন দেওয়া সম্ভব।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মেলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মাহবুব বলেন, জাতীয় সংসদে বিএনপির লোক নাই, তাই বলা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধি থাকবে না। তবে সংশোধিত সংবিধানে আছে নির্বাচনকালীন সরকারে টেকনোক্র্যাট নেওয়া যাবে। সুতরাং টেকনোক্র্যাট হিসেবে তাদের (বিএনপি) নেওয়া যায়।

Advertisement

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন জন্য আমরা করুণা চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি, আইন অনুযায়ী দেশে একটি সাংবিধানিক নির্বাচন হবে। জনগণ ভোট দেবে। জনগণের ভোট তাদের মুক্তি দেবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে খন্দাকার মাহবুব বলেন, আপনার (শেখ হাসিনা) বোঝা উচিত খালেদা জিয়া একজন অসুস্থ মানুষ, তাকে কিভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো রয়েছে, সেগুলো একদিনের মধ্যে জামিন দিতে পারেন আপনি। যখন দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা হবে তখন বোঝা যাবে খালেদা জিয়া কতটা দোষী। কিন্তু এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তি না দিলে বাংলাদেশের মাটিতে আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, সংবিধানে যে বিধান আছে সংসদ বাতিল করে দিয়ে নির্বাচনে আসুন এবং নির্বাচনকালীন সরকারে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করুন।

সরকারের সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের যে আলাপ-আলোচনা তা শেষ হয়ে যায়নি। সংবিধান মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলছেন, সংবিধান সংবিধান। আমরা বলছি, সংবিধান বর্তমান অনির্বাচিত সংসদ সদস্য দিয়ে সংশোধন করেছেন ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য।

Advertisement

তিনি বলেন, এই সংশোধিত সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে রয়েছে- সংসদ নির্বাচন দুইভাবে হতে পারে। সংসদ শেষ হওয়ার অর্থাৎ ৫ জানুয়ারির ৯০ দিন পূর্বে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হতে পারে। এরপর (৫ জানুয়ারি) সংসদ বাতিল হয়ে যাবে। তাহলে জানুয়ারি মাসের পরে আপনি নির্বাচন করুন, আপনার কথা থাকবে আমাদের কথাও থাকবে। সংসদ তখন বহাল থাকবে না।

সাংবাদিক নেতা এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা প্রধানমন্ত্রী কয়েকবার বলেছেন। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চান না, প্রতিদ্বিন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বচন চান, সব ভালো কথা বলেছেন। এখন ভালো কথাগুলো কাজে পরিণত করার অপেক্ষায় আছি।

ঐক্যফ্রন্টে সাত দফাকে তিনটি ভাগে ভাগ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমটা সংসদ ভেঙে দেয়া, দ্বিতীয়টা নির্দলীয় সরকার এবং তৃতীয়টা খালেদা জিয়া ও অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। তৃতীয় অংশটা কাজে পরিণত করা খুব সোজা। কেন না খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে তা ফৌজদারি হলেও বিষয়টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

এমএএস/আরএস/এমএস