শিশুদের জ্বর হলেই ডেঙ্গু হবে, বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু এখন ঢাকার সর্বত্র ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। এ সময় বাচ্চাদের শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি গরম অনুভূত হলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ বাচ্চারা নিজেদের অসুখের কথা বলতে পারে না। অভিভাবকদেরই বুঝে নিতে হবে। এজন্য মা-বাবাকে শিশুদের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement
রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তারি পড়ুয়া মা তার বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন। পাঁচ মাস বয়সী বাচ্চা এলিসের দুদিন ধরে জ্বর। নিজে এমবিবিএসের শিক্ষার্থী হয়েও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আসা।
জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, স্যারদের কাছ থেকে ফোনে পরামর্শ নিয়েছি, ওষুধ দিয়েছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। সন্দেহ হচ্ছে, ডেঙ্গু বা ভাইরাস জনিত রোগ কি-না। তাই এখানে প্রফেসর দেখাতে আনলাম। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারবো, এর আগে দেখি ডাক্তার কী বলেন- জানান ইয়াসমিন।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে তা আরও ভয়াবহ হতে পারে। কারণ পানি এত বেশি কমে যেতে পারে যে, শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে। শিশুর রক্তচাপ কমে গিয়ে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এজন্য দেরি না করে শিশুর জ্বর হলেই খুব দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যদি ডেঙ্গু ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবস্থা নিতে হবে।
Advertisement
এ বিষয়ে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মাহমুদা হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ছোট-বড় সবাই এই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রোগে ছোট্ট শিশুরা বেশি কষ্ট পায়। দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে তারা।
তিনি বলেন, অনেক বাচ্চাই এখন চিকিৎসা নিতে আসছে। বেশ কয়েকজনের অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। কিন্তু বড় কোনো ইনসিডেন্ট হয়নি। মারা যাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের এখানে নেই।
বাচ্চাদের বিষয়ে মা-বাবাকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে হাসপাতালটির শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হামিদুর রহমান বলেন, বাচ্চাদের জ্বর হলেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। পরামর্শ ব্যতীত কোনো ওষুধ সেবন করানো যাবে না। এখন যেহেতু ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি, তাই এটাই এখন সবচেয়ে বড় পরামর্শ। এর বাইরে শিশুদের তরল খাবার দিতে হবে এবং নিয়মিত ফলোআপ করাতে হবে।
এমএ/এসএইচএস/এমএআর/এমএস
Advertisement