নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে নিয়ে বিব্রত অাওয়ামী লীগ সরকার। নিজ দলের মধ্যেই তিনি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। নৌমন্ত্রীর আচরণ ও বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে দলের অনেক নেতাকর্মীই তার ওপর নাখোশ। কারণ তার কারণে সরকারকে হেনস্তা হতে হচ্ছে।
Advertisement
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পরিবহন শ্রমিকনেতা ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীরা গত চারদিন ধরে অান্দোলন করছে।
শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নৌমন্ত্রী এক পর্যায়ে মন্তব্য করেন, ‘ভারতের মহারাষ্ট্রে এক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা গেছে, সেখানে তো এত হইচই নেই’। তার এমন মন্তব্যে গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে চলছে তীব্র সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের মন্তব্যের ঝড় বইছে।
এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় অাওয়ামী লীগ ও বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতার সঙ্গে। অালাপকালে জানা গেছে, তারা শাজাহান খানকে সহ্যও করতে পারছেন না, অাবার দলীয় লোক বলে তার পদত্যাগও দাবি করতে পারছেন না। আবার সাংবাদিকদের কাছে নামও প্রকাশ করতে পারছেন না।
Advertisement
অালোচনাকালে তারা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা শাজাহান খানের কারণেই হয়েছে। এ জন্য বাইরের মানুষ তো দূরের কথা ঘরের স্ত্রীর কাছেও জবাবদিহি করতে হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আজ (বুধবার) বিকেলে ধানমন্ডিস্থ অাওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের সামনে সাবেক কয়েকজন ছাত্রনেতা বসে অাড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে তারা শাজাহান খানের কথা ও মন্তব্য নিয়ে অালোচনা করছিলেন।
তারা বলছেন, শাজাহান খানের ভাষাগত সমস্যার কারণে এর অাগেও দল বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। এবারও একই পরিস্থিতি।
এছাড়া আরও কয়েকজনের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের টেলিফোনে অালাপ হলে তারাও নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
Advertisement
শাজাহান খানের পদত্যাগের দাবিতে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সরকারের কর্মকাণ্ডেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। মন্ত্রীরা কাজকর্ম ফেলে একের পর এক মিটিং করছেন। এক মন্ত্রীর অপকর্মে অন্য মন্ত্রীকে দুঃখ প্রকাশ করতে হচ্ছে। তাদেরও বিভিন্ন পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের এমন মন্তব্যের কারণে অাওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী অামির হোসেন অামু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল অাহমেদ সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অাসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ অনেক মন্ত্রীই দুঃখ প্রকাশ করছেন।
এদিকে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বারবার সংঘটিত শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সববয়সী মানুষের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক জীবনহানির জন্য দায়ী পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলা। বর্তমানে সড়ক-মহাসড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলার উসকানিদাতা নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করছি।’
এফএইচএস/বিএ