আন্তর্জাতিক

মাদার তেরেসা চ্যারিটি হোমে শিশু বিক্রির অভিযোগ

১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে বিক্রির অভিযোগে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত মাদার তেরেসা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অব চ্যারিটির এক নারী কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

একই কেন্দ্রের আরও দুই নারী কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ।

রাজ্যের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এই ঘটনায় তারা বিস্মিত। সুনিতা কুমার নামে ওই চ্যারিটির এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, আমাদের এই কেন্দ্রে যা হয়েছে তা জেনে আমরা বিস্মিত। এটা আমাদের নৈতিক অবস্থানের পরিপন্থি। বিষয়টাকে আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ঘটনাটি যদি সত্যিই হয়ে থাকে, তবে এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে কখনো না হয় তার জন্য আমারা সব ধরনের ব্যবস্থা নেব।

Advertisement

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা তাদের তদন্তের পরিধি বাড়াচ্ছেন।

বিবিসি হিন্দিকে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এই কেন্দ্র থেকে আরও কয়েকটি শিশুকে বিক্রির কথা আমরা জানতে পেরেছি। ওই শিশুদের মায়েদের নামও আমরা জানতে পেরেছি এবং বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চলছে।

ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচিতে অবস্থিত এই কেন্দ্র থেকে পুলিশ ১ লাখ ৪০ হাজার রুপিও উদ্ধার করেছে।

নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা ১৯৯৭ সালে মারা যান। তার আগে ১৯৫০ সালে এই মিশনারিজ অব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করে যান তিনি।

Advertisement

বিশ্বজুড়ে তাদের ৩ হাজারের বেশি নান রয়েছে। মাদার তেরেসা অনাথ আশ্রম, লঙ্গরখানা, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কুষ্ঠরোগী ও পরিত্যক্ত শিশুদের আবাসনের ব্যবস্থাও করেছিলেন। অবিবাহিত গর্ভবতী নারীদের জন্যও কাজ করে এই মিশনাজির অব চ্যারিটি, তবে এখন আর তাদের গর্ভপাতের ব্যবস্থা করা হয় না।

সিডব্লিউসি চেয়ারম্যান রুপা কুমারি বিবিসিকে বলেছেন, উত্তর প্রদেশের এক দম্পতির কাছে ১ লাখ ২০ হাজার রুপিতে এক নবজাতককে বিক্রির ঘটনাটির তদন্ত করছি আমরা। কিন্তু ওই দম্পতিকে বলা হয়েছিল এই টাকা দিয়ে হাসপাতালের খরচ মেটানো হবে।

রুপা কুমারি আরও বলেছেন, ১৯ মার্চ গর্ভবর্তী এক তরুণী ওই কেন্দ্রে যান। তিনি যে ছেলে সন্তানটির জন্ম দেন ১৪ মে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়।

রুপা কুমারি বলছেন, সন্তান প্রসবের জন্য ওই তরুণীকে যখন হাসপাতালে নেয়া হয় তখন বিষয়টি তাদের জানানো উচিৎ ছিল। তারা এখন দেখছেন, অন্যান্য কয়েকটি শহরে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার রুপিতে এর আগেও এই কেন্দ্র থেকে শিশু বিক্রি হয়েছে।

ওই মিশনারির রাঁচি কেন্দ্রে থাকা ১৩ গর্ভবতী নারীকে ইত্যেমধ্যে অন্য এক জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে সিডব্লিউসি।

সন্তান দত্তক নেয়ার বিষয়ে কঠোর আইন আর দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ভারতে অনেকে আইনের বাইরে গিয়ে শিশু কিনতে চান। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশটিতে বৈধউপায়ে সন্তান দত্তক নিতে পেরেছিলেন ৩ হাজার ১১ দম্পতি; যেখানে অপেক্ষমান তালিকায় ছিলেন আরও ১২ হাজার দম্পতি।

বিবিসি।

এনএফ/পিআর