এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের সঙ্গে দাম বেশি পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে সদরপুরের বাঙ্গি।
Advertisement
এছাড়া ফরমালিন মুক্ত থাকায় রমজানের নিত্যদিনের খাদ্য তালিকার চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বাঙ্গি। রমজানের প্রথম দিকে বাজারে ওঠা বাঙ্গির দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরাও বেশ লাভবান। বর্তমানে কৃষকরা মাঠ থেকে বাঙ্গি তোলা ও বাজারজাত করণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাঙ্গি তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ খেত থেকে তোলা বাঙ্গি ভ্যান, নসিমন করে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাঙ্গি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্যে উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মটুকচর, কাটাখালি, আবুলের মোড়, বাঁধানোঘাট, ভাষানচর ইউনিয়নের নতুন বাজার, কারিরহাট, আমিরাবাদ এলাকায় প্রতিদিন সকাল-বিকেল হাট বসছে।
Advertisement
এবছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। হাটগুলোতে মধ্যম ও বড় শ্রেণির ১০০ বাঙ্গির দাম ২ হাজার টাকা। বাছাইকৃত বড় সাইজের ১০০ বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা।
সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদুল মিরাজ জানান, এবছর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৫১০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। এবছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাঙ্গি উৎপাদনে প্রতি হেক্টরে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কৃষকরা বাঙ্গি বিক্রি করেছেন ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
কৃষি কর্মকর্তা জানান, বাঙ্গি চাষিদের বিভিন্ন প্রকার পরামর্শ ও সেবা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ অঞ্চলের কৃষকরা আরও বেশি ভালো লাভবান হবেন।
সদরপুর উপজেলার কাটাখালি এলাকার বাঙ্গি চাষি আবুল হোসেন বলেন, তিন বিঘা জমিতে এবছর বাঙ্গির আবাদ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছি।
Advertisement
সদরপুর উপজেলার শৈলডুবী এলাকার কৃষক চান মিয়া জানান, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর বাঙ্গির চাহিদাও বেশ বেড়েছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাঙ্গি কিনতে ব্যবসায়ীরা আসছেন।
ভাষানচর এলাকার কৃষক মো. সোবাহান জোয়াদ্দার বলেন, আমার খেতের বাঙ্গি বিক্রি করে দিয়েছি। প্রায় অর্ধলাখ টাকা লাভ করেছি এবছর। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঙ্গির হাট বসে সেখানে আমি বাঙ্গি বিক্রি করেছি। এছাড়া খেত থেকেও অনেক ব্যবসায়ী বাঙ্গি কিনে নিয়ে গেছেন।
দোহার থেকে সদরপুরের হাটে বাঙ্গি কিনতে আসা ব্যবসায়ী সৈয়দ সামছু মাতুব্বর জানান, সদরপুরের বাঙ্গির মান ভালো এবং দামও একটু কম। তাই এখানে প্রতিবছরই বাঙ্গি কিনতে আসি। এই বাঙ্গি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়িযোগে পাঠাই। আমার মত অনেকেই এখানে আসে বাঙ্গি কিনতে।
সদরপুর উপজেলার ভষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছমির বেপারি বলেন, ভাষানচর ইউনিয়নে বাঙ্গির আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এবছর বাঙ্গির ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হয়েছে। সদরপুরের বাঙ্গি জেলার চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদাও পূরণ করছে।
এএম/এমএস