রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসনমন্ত্রী ড. উইন মায়াত আয়ে।
Advertisement
বুধবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর হাতে দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খবর নিতে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন মিয়ানমারের মন্ত্রী ড. উইন মায়াত আয়ে।
১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্পে পৌঁছান মন্ত্রী ড. উইন। তারা সেখানে পৌঁছালে প্রথমে ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। পরে ডি-৫ ব্লকের ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলাপ করেন মন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।
এ সময় ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ডসহ রোহিঙ্গাদের নাগরিক নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নেন তিনি। এ সময় রোহিঙ্গারাও তাদের দাবি-দাওয়া মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
Advertisement
রাখাইন ভাষায় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা রোহিঙ্গা আবুল ফজল বলেন, মন্ত্রী আমাদের (রোহিঙ্গাদের) নাগরিক সুবিধা দিয়ে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা চলছে বলে জানান।
উখিয়া-টেকনাফ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় আসা ড. উইন বুধবার সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের কোনো মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান। তাকে একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করানো হয়।
এ সময় মিয়ানমারের ১২ সদস্য ছাড়াও কক্সবাজার রোহিঙ্গা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহিদুর রহমান, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন, উখিয়া-টেকনাফ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা, ওসি উখিয়া আবুল খায়ের, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক কোঅর্ডিনেটর, আইএমও এবং ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। রাখাইনে তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের জন্য আট হাজার ৩২ জনের একটি তালিকাও দেয়া হয়েছিল মিয়ানমারকে। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করে ৩৭৪ জনকে রাখাইনের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেকোনো সময় তাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত তারা। এরপরই কোন মন্ত্রী পর্যায়ের লোককে মিয়ানমার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে পাঠিয়েছে।
Advertisement
সায়ীদ আলমগীর/এএম/এমএস