মালদ্বীপে ভারত সামরিক হস্তক্ষেপ করলে তার তীব্র বিরোধিতা করবে প্রতিবেশী চীন। বেইজিংয়ের দাবি, এর ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
Advertisement
মালদ্বীপের চলমান সঙ্কট মোকাবেলায় ভারতের সামরিক সাহায্য চেয়ে মঙ্গলবার কলম্বো থেকে আহ্বান জানান দেশটির নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন যে বিচারপতি ও রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করে রেখেছেন, তাদের মুক্ত করতে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন নাশিদ। তার ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি বলছে, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। এমনকি সেনাবাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে।
ভারতের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে চীন। বুধবার বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শ্যুয়াং বলেছেন, আন্তর্জাতিক মহলের উচিত মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব মাথায় রেখে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা। তৃতীয় পক্ষের এমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয়; যাতে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। তার মতে, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান বের করতে হবে।
তবে চীনের আপত্তিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ নাশিদ। কলম্বো থেকে তিনি টুইটারে জানিয়ে দেন, ভারতের উচিত অবিলম্বে সামরিক প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। চীনের প্রস্তাবকে খারিজ করে তিনি জানান, আলোচনায় পরিস্থিতি আরো জটিল হবে।
Advertisement
ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের জোরাল আহ্বান জানিয়ে নাশিদ বলেন, ভারত কখনই অন্য দেশ কব্জা করে না। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৮৮ সালেও একইভাবে ভারত সামরিক সাহায্য করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার পর চলে গিয়েছিল। তার দাবি, সকল মালদ্বীপবাসী অতীতেও ভারতের ভূমিকাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছিল, আজও তাদের দিকেই তাকিয়ে।
গত সপ্তাহে ভারতীয় মহাসাগরে অবস্থিত এ নৈসর্গিক দ্বীপরাষ্ট্রে শুরু হয় চরম রাজনৈতিক সঙ্কট। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনকে সাবেক প্রেসিডেন্টসহ ৯ রাজবন্দির অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
এর পাশাপাশি, ইয়ামিনের দলত্যাগী ১২ সাংসদের আসনও ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। আদালতের ওই রায়ের ফলে, ৮৫ আসন-বিশিষ্ট মালদ্বীপের সংসদে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় অভিশংসনের শঙ্কায় পড়েন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন।
কিন্তু, আবদুল্লা ইয়ামিন সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। উল্টা সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্ট তার এখতিয়ার-বহির্ভূত কাজ করছে। ইয়ামিনের দফতর জানিয়ে দেয়, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মানা হবে না।
Advertisement
সোমবার দেশে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আবদুল্লা সঈদসহ ২ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুমকে। পরে চাপের মুখে গভীর রাতে আগের নির্দেশ প্রত্যাহার করে সুপ্রিম কোর্টের বাকি তিন বিচারপতি। এবিপি আনন্দ।
এসআইএস/আইআই