টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুরে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রাণী দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস কেটে গেছে।
Advertisement
তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত এ খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এ নিয়ে বিচারবঞ্চিত হওয়ার শঙ্কাসহ হতাশায় ভুগছেন মামলার বাদী নিহত অনিল কুমার দাসের ছেলে নির্মল কুমার দাস ও তাদের প্রবাসী মেয়ে অঞ্জনা দাস। এ হত্যা মামলাটির তদন্ত করছে টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জানা যায়, এ ঘটনায় অনিল কুমার দাসের দুই ভাই রতন ও স্বপনকে গত ২৮ জুলাই রাতে টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে গত ১ আগস্ট আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।
২ ও ৩ আগস্ট দুইদিন শুনানি শেষে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে তারাও তাদের রিমান্ডে নিয়ে ৮ ও ৯ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করে।
Advertisement
রিমান্ডে ডিবি পুলিশ তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। এর ফলে গত ২৮ ডিসেম্বর স্বপন কুমার দাস জামিন পেয়েছেন।
জড়িত সন্দেহে এ হত্যাকাণ্ডের পর এলাকার দুই যুবক শহীদ মোমেন ও ভজন শীলকে ২৯ জুলাই রাতে রসুলপুর বাজারে তাদের নিজ নিজ দোকান থেকে এবং ৩০ জুলাই দুপুরে অপর এক যুবক মফিজউদ্দিনকে তাদের বাড়ির কাছ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়। পরে ৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদের স্বজনদের খবর দিয়ে টাঙ্গাইল র্যাব অফিসে এনে মুচলেকা রেখে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তাদের কাছ থেকে র্যাব এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি। ওই তিন যুবক ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই এলাকার তিন যুবক দুলু মিয়া, মিনজু ও খোকন ভূঁইয়াকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
একপর্যায়ে মিনজু ও খোকন ভূঁইয়াকে ছেড়ে দেয়া হলেও দুলু মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে দুলু মিয়াও জামিন পেয়েছেন।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) ওসি অশোক কুমার সিংহ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের এখনো কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ঘটনার পর আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করলেও তাদের কাছ থেকে আমরা কোনো তথ্য পাইনি। তবে স্থানীয় লোকজন আমাদের নজরদারিতে রয়েছেন। আশা করছি দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারব।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই রাতের কোনো এক সময় অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রাণী দাসকে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাদের গলায় ইটের বস্তা বেঁধে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের খোলা কূপে ফেলে যায়। পরদিন দুপুরে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
আরিফ উর রহমান টগর/এএম/জেআইএম