আইন-আদালত

বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া শিশুর ভাগ্য নির্ধারণ আজ

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া অবুঝ শিশু ফাতেমার ‘বৈধ অভিভাবকত্ব’ আজ বুধবার (১৬ আগস্ট) নির্ধারিত হবে। ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান তা নির্ধারণ করবেন।

Advertisement

এর আগে ৯ আগস্ট অবুঝ শিশু ফাতেমার ‘বৈধ অভিভাবকত্ব’ নির্ধারিত হওয়ার কথা থাকলেও বিচারক অসুস্থ থাকায় তা পিছিয়েছে। আবেদনকারী আট দম্পতি থেকে শিশুটির বাবা-মা বাছাইয়ের কথা ছিল। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তাই অভিভাবকত্ব নির্ধারিত হয়নি শিশু ফাতেমার। তবে ১৬ আগস্ট ফাতেমার বাবা-মা নির্ধারণ করতে দিন ধার্য করেন ঢাকার শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সামছুন নাহার।

ঐদিনই শিশু ফাতেমার প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে পায়নি উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক আবু সাঈদ।

প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আদালতের নির্দেশে বিমানবন্দরের ওই দিনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে শিশুটির প্রকৃত বাবা-মাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শিশুটির বাবা-মা দাবি করে কেউও লিগ্যাল নোটিশও দেয়নি। এছাড়া শিশুটি হারিয়ে গেছে মর্মে বিমানবন্দর থানায় কেউও জিডিও করেনি।

Advertisement

গত ২৫ জুলাই ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ফাতেমার প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। সেদিন তিনি ৯ আগস্টের মধ্যে শিশুটির প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার দিন নির্ধারণ করেন। প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে না পাওয়া গেলে শিশুটিকে নিতে আগ্রহী কোনো দম্পতিকে বাছাই করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার কথা জানানো হয়।

ওইদিন আট দম্পতি শিশুটিকে নিতে আদালতে আবেদন করেন। পরে আরও দুই দম্পতি আবেদন করেন। তাদের মধ্যে সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা রয়েছেন।

দম্পতিরা হলেন- ব্যবসায়ী আশিক ওয়াহিদ-শাহনাজ, পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ-নিঝুম আক্তার, সেনাবাহিনীর তথ্যপ্রযুক্তি ফার্মের কর্মকর্তা মাজহারুল-লায়লা নুর, ব্যবসায়ী আলমগীর-অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার, ব্যবসায়ী জামাল-শ্যামলী আক্তার, ব্যবসায়ী গোলাম সরওয়ার-দুলশাদ বেগম বিথি, ব্যবসায়ী শামসুল আলম চৌধুরী-শামিমা আক্তার চৌধুরী ও বিমানের কর্মকর্তা আ ক ম আতিকুর রহমান-মনালিসা দম্পতি।

উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই জর্ডান থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফিরছিলেন জয়দেবপুরের স্বপ্না বেগম। একই বিমানে শিশুটিকে নিয়ে তার মাও ফিরছিলেন। স্বপ্না জর্ডানে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়েছিলেন। অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীও একই কাজে সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানতে পারেন স্বপ্না।

Advertisement

স্বপ্না বিমানবন্দর পুলিশকে জানান, ওই নারীও জর্ডান থেকে একই ফ্লাইটে ফেরেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাস্টমস থেকে মালপত্র নিয়ে বের হয়ে বিমানবন্দরের ক্যানওপি পার্কিং এলাকায় স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন স্বপ্না।

এ সময় বিমানে পরিচয় হওয়া শিশুটির মা তাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপা আমার শিশুটাকে একটু ধরেন। ভেতরে মালপত্র রয়েছে, নিয়ে আসছি। আগে কথা হওয়ায় সরল বিশ্বাসে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন স্বপ্না। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও সেই নারী আর ফেরেননি।

পরে স্বপ্না আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের কাছে ঘটনাটি জানালে তারা শিশুসহ স্বপ্নাকে বিমানবন্দর থানায় পাঠায়। ওইদিনই বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর শিশুটিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়।

জেএ/এআরএস/এমএস