কে না জানে বাংলাদেশ, তথা উপমহাদেশের স্পিন ট্র্যাকের কথা! স্পিন দিয়েই তো গত বছর অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় করেছিল বাংলাদেশ। নতুন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ একাই ভেলকি দেখিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশদের। স্পিন দিয়েই গত বছর ভারতের মাটিতে বড় জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন ও’কিফ নামক এক আনকোরা স্পিনার ভেলকি দেখিয়েছিলেন বিরাট কোহলিদের।
Advertisement
এক দশকেরও বেশি সময় পর বাংলাদেশে টেস্ট সিরিজ খেলতে আসার আগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলও এখানকার স্পিন এবং স্পিনিং ট্র্যাক নিয়ে চিন্তিত।
আজ থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর ডারউইনে এক সপ্তাহের প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। বাংলাদেশের মতই সেখানকার আবহাওয়া। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে এসে খেলার জন্য প্রায় একই পরিবেশ এবং উইকেটে এক সপ্তাহ নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন স্টিভেন স্মিথরা।
স্বাভাবিকভাবেই ডারউইনে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের প্রস্তুতির মূল বিষয় স্পিন। কারণ বাংলাদেশের স্পিনিং ট্র্যাক নিয়ে তারা খুব চিন্তিত। অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যান নিজেও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্পিন নিয়ে চিন্তার কথা।
Advertisement
পারিশ্রমিক নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। প্রায় তিন মাস তারা কোনো ক্রিকেট খেলছেন না। এমনকি অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ নাকি ২ মাস ব্যাটই হাতে তুলে নেননি।
তবে কোচ ড্যারেন লেম্যান মনে করেন, যে কারণেই হোক লম্বা বিরতিটা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের জন্য ভালোই হয়েছে। দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে থাকার কারণে তারা অনেক সফর করতে পেরেছে। এখন বেশ চনমনে এবং মাঠে নামার জন্য তারা উত্তেজিত। এটা এক দৃষ্টিতে দলের মানসিক অবস্থা শক্তিশালী করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘
নর্দান টেরিটরি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এনটিসিএ) ডারউইনে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের জন্য খেলার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। এ কারণে এনটিসিএর উচ্চসিত প্রশংসা করেন লেম্যান। তিনি বলেন, ‘এনটিসিএ চমৎকার। তারা ঢাকার মত পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে আমাদের জন্য। বাংলাদেশে যে উইকেটে খেলতে হবে, প্রায় তেমন উইকেট আমাদেরকে তৈরি করে দিয়েছে তারা। ঢাকার উইকেট তো অনেক লো, স্লোন এবং স্পিনিং।’
ঢাকার মতই উইকেট তৈরি করেছে এনটিসিএ। লেম্যান বলেন, ‘তিনটি উইকেট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন আমরা ঢাকাতেই অনুশীলন করছি। আরও তিনটি উইকেট তৈরি করা হয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটের মত করে। একই সঙ্গে সেন্টার উইকেটের সুবিধাও দিয়েছে তারা। যাদে আমরা এখানে ম্যাচ প্র্যকটিস করতে পারি এবং ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করতে পারি।’
Advertisement
বাংলাদেশের তাপমাত্রা এবং আদ্রতার সঙ্গে ডারউইন থেকেই পরিচিত হয়ে আসছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। বিষয়টা জানিয়েছেন ড্যরেন লেম্যানই। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া এবং আদ্রতার কথা চিন্তা করলে, যেটা আমরা ঢাকায় গিয়ে পাবো, আমরা সেটা এখানেই পাচ্ছি। সব মিলিয়ে প্রস্তুতিটা দারুণ। বিশেষ করে, প্রস্তুতিটা ভালোই হচ্ছে, যারা দক্ষিণাঞ্চলীয় শীতের শহর থেকে ঢাকায় যাবে তাদের জন্য।’
বাংলাদেশে আসার পরও প্রথম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামার আগে পর্যাপ্ত সময় পাবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যান বলেন, ‘আমরা এখানে অনেক সময় পাচ্ছি। এছাড়া বাংলাদেশে পৌঁছানোর পরও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অনেক সময় পাবো।’
এখানকার আবহাওয়া খুব বেশি সমস্যা করতে পারবে না বলে বিশ্বাস করেন লেম্যান। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সেখানে গিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। আমরা একটি দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারবো। যেখানে খেলোয়াড়দের যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারবো। ঢাকায় যাওয়ার আগে আগামী সাত-আট দিনে সেখানকার পরিবেশ এবং উইকেটের জন্য আমরা নিজেদের দারুণভাবে প্রস্তুত করে তুলতে পারবো।’
আইএইচএস/জেআইএম