ফিচার

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ : শহিদ মো. নজমুল হক

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহিদ মো. নজমুল হক পিএসপি, পিপিএমকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) ২০১৭ প্রদান করা হয়। তাঁকে নিয়ে আজকের আয়োজন-

Advertisement

মো. নজমুল হক ১৯২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নওগাঁ কে.ডি.এইচ.ই হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ একাডেমি, ওয়াশিংটন ডিসি থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

নজমুল হক সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ১৯৫০ সালে ময়মনসিংহ জেলায় সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার পদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। সুদীর্ঘ ২০ বছরের কর্মজীবনে পুলিশ সুপার পদে তিনি ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও বরিশাল জেলায় দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে দুর্নীতি দমন বিভাগের উপ-পরিচালক পদে কর্মরত অবস্থায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। তিনি চট্টগ্রামে পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

Advertisement

একাত্তরের মার্চ মাসে প্রায় প্রতিদিনই তাঁর সরকারি বাসভবনে স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা, পরামর্শ, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও স্বাধিকার আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠক হতো। এসব বৈঠকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য তিনি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হন। ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ চট্টগ্রাম দামপাড়া পুলিশ লাইনে পাক-বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিকামী পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখোমুখি যুদ্ধে তিনি নেতৃত্ব দেন।

২৯ মার্চ চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ পাক-বাহিনীর হাতে চলে যাওয়ার পর ৭ এপ্রিল একজন মেজরের নেতৃত্বে কয়েকজন পাকসেনা নজমুল হকের সরকারি বাসভবন থেকে তাঁকে নিয়ে যায়। পরে জানা যায় যে, কোনো এক বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যার পর তাঁকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

পেশাগত জীবনে কৃতিত্বের জন্য ১৯৬৭ সালে শহিদ মো. নজমুল হক পাকিস্তান পুলিশ মেডেল (পিপিএম) প্রাপ্ত হন।

এসইউ/আরআইপি

Advertisement