বুড়িগঙ্গা নদী পুনরূদ্ধার প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে। এর আগে দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলেও কোনো ব্যয় বাড়ানো হয়নি। তবে এবার ১৮১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। একইসঙ্গে মেয়াদ বাড়ছে আরো দুই বছর।আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পে নতুন সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হচ্ছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।সূত্র জানায়, প্রকল্পের অনুমোদনের তিন বছরে সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও ৫ বছরের বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদী পুনর্খননের ফলে পুংলী-বংশাই-তুরাগ নদীর উপর এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ২২টি ব্রিজের ফাউন্ডেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল। যা প্রকল্পের শুরুতে বিবেচনায় নেয়া হয়নি। এছাড়া সময় মতো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়াসহ কারিগরি বেশ কিছু ত্রুটির কারণেই প্রকল্পটি সময় মতো বাস্তবায়ন করা যায়নি।এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এএন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধূরী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। ফলে বাস্তবায়ন ঠিক মতো হয়নি। বর্তমানে নদীর উপর ব্রিজগুলোর ফাউন্ডেশন ট্রিটমেন্ট কাজ যুক্ত করাসহ পলি প্রবাহের হার কমাতে সেডিমেন্ট বেসিন নির্মাণ, রেগুলেটর ও ফিসপাস নির্মাণের ফলে প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ছে। আশা করছি অনুমোদনের পর বাস্তবায়ন গতি ত্বরান্বিত হবে।সূত্র আরো জানায়, গত কয়েক দশকে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা এবং বালু নদীর প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এসব নদীর পানি শিল্প কারখানা থেকে নির্গত তরল বর্জ্য, বিষাক্ত রাসায়নিক এবং মানববর্জ্যরে কারণে দূষিত হয়ে পড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক পট পরিবর্তনের কারণে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর মারাত্মকভাবে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। বুড়িগঙ্গা ও ঢাকার চারপাশের অন্য নদীগুলো জনস্বাস্থ্য, ইকোসিস্টেম এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার উপর মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করছে।এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজন থাকলেও তা আর হয়নি। এ জন্য বাস্তবায়ন সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি কারিগরি কমিটি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়। দুটি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নদীর উপর অবস্থিত ব্রিজগুলোর ফাউন্ডেশন ট্রিটমেন্টের সংস্থান রেখে প্রথম সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। যা অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০০৪ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০১০ সালে এই সংক্রান্ত এক প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ওই সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৪৪ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এমএ/আরএস/পিআর
Advertisement