ফিচার

বিমানের একটি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কত, নির্ধারণ হয় কীভাবে?

বিমানের একটি ইঞ্জিনের আয়ুষ্কাল কত, নির্ধারণ হয় কীভাবে?

একটি বিমানের ইঞ্জিন কতদিন চলবে তা নির্ভর করে তার ধরন, ব্যবহারের ধরন এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ওপর। সাধারণত ২৫-৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত এটি চালানো সম্ভব। তবে সময়মতো মেরামত, পর্যবেক্ষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইঞ্জিনের স্বাস্থ্য ভালোভাবে নজরদারি করা হয়।

Advertisement

বিমান ইঞ্জিনের মেয়াদ সাধারণত ঘণ্টা বা চক্র হিসাব করে নির্ধারণ করা হয়। একটি সাইকেল বা চক্র মানে হচ্ছে একবার টেকঅফ, ক্রুজ এবং ল্যান্ডিং এটা একটি পূর্ণ অপারেশন। বড় যাত্রীবাহী বিমানের (যেমন- বোয়িং ৭৩৭, এয়ারবাস এ৩২০) জেট ইঞ্জিন সাধারণত চলে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত। অথবা প্রায় ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার সাইকেল পর্যন্ত। তবে এটি নির্ভর করে ইঞ্জিনের ধরন, ব্যবহারের ধরন (শর্ট হুল/লং হুল ফ্লাইট), রক্ষণাবেক্ষণের মান ও নিয়মিত মেরামতের উপর।

তবে বিমানের ইঞ্জিন কখনোই টেস্ট ছাড়া উড্ডয়নের অনুমতি পায় না। বিমান কখনোই একেবারে খারাপ হলে আকাশে ওঠে না। এটি বহুস্তর বিশিষ্ট পরিদর্শন ও টেস্টের মাধ্যমে নিয়মিত যাচাই হয়। যেমন-

ইআইসিএএস/ ইসিএএম সিস্টেমবড় যাত্রীবাহী বিমানে থাকে ইঞ্জিন ইন্ডিকেটিং অ্যান্ড ক্রু অ্যালার্টিং সিস্টেম (ইআইসিএএস) বা ইলেকট্রনিক সেন্ট্রালাইজড এয়ারক্রাফট মনিটর (ইসিএএম)। ইঞ্জিনের টেম্পারেচার, প্রেসার, আরপিএম, ফুয়েল ফ্লো, কম্পন-সবকিছু রিয়েল টাইম মনিটর হয়। কোনো অস্বাভাবিকতা হলে পাইলটদের সতর্ক করে।

Advertisement

শিডিউল মেইন্টেনেন্সবিমান নির্মাতারা ইঞ্জিনের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশনা দেয়। এইগুলো ৩ভাবে হয়- লাইন মেইন্টেনেন্স, যা প্রতিদিনের ফ্লাইটের আগে ছোটখাটো চেক। এ-চেক/বি-চেক, যা কয়েকশো ঘণ্টা ব্যবহারের পর গভীর পরীক্ষা। সি-চেক/ডি-চেক, যা কয়েক হাজার ঘণ্টা পর পুরো বিমান খুলে বিশ্লেষণ।

ইঞ্জিন ট্রেন্ড মনিটরিংএকটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইঞ্জিনের গত মাসের পারফরম্যান্স ট্র্যাক করা হয়। যদি ইঞ্জিনের থ্রাস্ট কমে, ফুয়েল বেশি লাগে, বা তাপমাত্রা বাড়ে তাহলে সমস্যা ধরা পড়ে।

কত ঘণ্টা ব্যবহার করার পর ইঞ্জিন পরিবর্তন করতে হয়?টাইম বিফোর ওভারহল, এটি হলো নির্দিষ্ট ঘণ্টা/চক্র পরে ইঞ্জিন পুরো খুলে মেরামতের সময়। জেট ইঞ্জিনের টাইম বিফোর ওভারহল বা টিবিও সাধারণত ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার ঘণ্টা। এরপর ইঞ্জিন সগপ ভিজিট হয়। তাতে বিভিন্ন অংশ মেরামত, ব্লেড পাল্টানো, ক্যাবিন প্রেসার চেক ইত্যাদি করা হয়।

কীভাবে বোঝা যায় বিমান ক্রুটিপূর্ণ কি না?সাধারণ যাত্রী হিসেবে বোঝা কঠিন, কিন্তু নিচের বিষয়গুলো ইঙ্গিত দিতে পারে। যেমন-বিমানে বারবার টেকনিক্যাল কারণে বিলম্ব: ইঞ্জিন সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে এমন হয়। জোরে কাঁপুনি বা শব্দ: ইঞ্জিনে সমস্যা হলে অস্বাভাবিক কম্পন বা উচ্চ শব্দ হতে পারে। ফ্লাইট চলাকালীন ধোঁয়া বা জ্বালানির গন্ধ, এটা ত্রুটির লক্ষণ। পাইলটের ঘোষণা বা মাঝপথে ফিরে আসা: কারিগরি সমস্যা হলে পাইলট ব্যাক করে।

Advertisement

আরও পড়ুন বাংলাদেশের যত ভয়াবহ প্লেন দুর্ঘটনা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ১০ বিমানবন্দর

সূত্র: বোয়িং মেইন্টেনেন্স ম্যানুয়াল, অ্যাভিয়েশন স্টক এক্সচেঞ্জ

কেএসকে/এএসএম