অর্থনীতি

ডিএসইতে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

ডিএসইতে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার পাশাপাশি দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতিও বাড়তে দেখ যাচ্ছে। ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে যাওয়া লেনদেন ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ৮০০ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।

Advertisement

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো ডিএসইতে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো। সেইসঙ্গে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটলো।

ডিএসইতে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হলেও লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। এরপরও বেড়েছে মূল্যসূচক। দরপতনের তালিকা বড় হওয়ার পরও সূচক বাড়ার মূল কারণ গ্রামীণফোন, রবি’র মতো বড় মূলধন বা সূচকে বড় প্রভাব রাখে এমন বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে।

তবে অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচক বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

Advertisement

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কিন্তু দুপুর একটার পর হঠাৎ করেই এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে দেখতে দেখতে দাম কমার তালিকা বড় হয়ে যায়। অবশ্য এর মধ্যেও বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে। ফলে মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮০টির। আর ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১১৩টির দাম কমেছে এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩২টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৮টির দাম কমেছে এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫০টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

মূল্যসূচক বাড়ার উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ৭৮৯ কোটি ৬৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩৪ কোটি ৩৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৫ নভেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, গ্রামীণফোন, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, প্রাইম ব্যাংক, বিচ হ্যাচারি এবং বেস্ট হোল্ডিং।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৩২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৫টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এমএএস/এমএএইচ/এমএস