কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কালেজ ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তবে দর্শনার্থীর বেশি আসায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছেন তিনি। এমনটাই দাবি করেছেন তার ছেলে ইমাম জাফর নোমানী।
Advertisement
তিনি জাগো নিউজকে (১০ জুলাই) বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, যদিও তার মায়ের শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভাল হয়েছে তবু এখনো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। নোমানীর ভাষ্য, ‘আম্মার শরীরে সংক্রমণের মাত্রা অনেক বেশি। তিনি আইসিইউতে আছেন। আম্মাকে দেখতে অনেকেই হাসপাতালে আসছেন। চিকিৎসকরা বলছেন অতিরিক্ত ভিজিটরের কারণে আম্মার শরীরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সবাইকে তাই অনুরোধ করছি আইসিইউতে এসে সংক্রমণ না বাড়ানোর জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আম্মার উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২ টা পর্যন্ত ইউনিভার্সেল হাসপাতালে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ডের সভায় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রথিতযশা কিডনি, বক্ষ ব্যাধি, হৃদরোগ ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড আম্মার শারীরিক অবস্থা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করলেন। এছাড়া স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষ থেকে দুজন কিডনি বিশেষজ্ঞও বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন।’
ফরিদা পারভীনের শারিরীক জটিলতার কথা জানিয়ে ইমাম জাফর নোমানী বলেন, ‘বর্তমান আম্মার যে কোনো ধরনের মুভমেন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কোথাও নেওয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ। তার বর্তমান যে শারিরীক জটিলতা তাতে বিদেশে চিকিৎসা নিলেও যে উন্নতি হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আম্মা দেশে প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা পাচ্ছেন। যদি কোনো কারণে এই হাসপাতাল পরিবর্তন করতেই হয় সেক্ষেত্রে মাল্টিডিসিপ্লিনারি (যেখানে সব শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা করা হয়) কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অথবা বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (প্রাক্তন পিজি) বিবেচনায় রয়েছে।’
Advertisement
সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন গত কয়েক বছর ধরে কিডনির রোগ, শ্বাসকষ্টজনিত রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। সম্প্রতি ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে গত ৫ জুলাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এ সংগীতশিল্পী।
ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত পরিবেশন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান।
১৯৯৩ সালে সিনেমার গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এই শিল্পী।
২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন।
Advertisement
এমআই/এলআইএ/জিকেএস