• চামড়া সংগ্রহে তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন ধরনের তথ্য• ভাগাড়ে ফেলা হয়েছে ৫০ হাজার নষ্ট চামড়া: সিটি করপোরেশন• শ্রমিক সংকট, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অসচেতনতায় পচেছে চামড়া
Advertisement
চট্টগ্রামে কোরবানির চামড়া সংগ্রহের সঠিক তথ্য নেই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। চামড়া সংগ্রহ নিয়ে আড়তদার সমিতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম ও বিসিক তিন ধরনের তথ্য দিয়েছে। সরকারিভাবে ৬২০টি চামড়া নষ্ট হওয়ার কথা বললেও সিটি করপোরেশন বলছে এ সংখ্যা ৪০-৫০ হাজার। অভিযোগ রয়েছে অব্যবস্থাপনারও।
মন্ত্রণালয় নির্ধারিত এবারের দামচলতি কোরবানিতে পশুর চামড়ার দর গত বছরের চেয়ে বাড়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়া ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। পাশাপাশি ঢাকায় সর্বনিম্ন কাঁচা চামড়ার দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ১৫০ টাকা।
এবার অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা কোরবানির পশুর বর্জ্য দিনের মধ্যেই অপসারণ করেছি। কোরবানির পরের দিন নগরীর বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, মুরাদপুর থেকে প্রায় ৪০-৫০ হাজারের মতো নষ্ট চামড়া রাস্তা থেকে তুলে ভাগাড়ে ফেলেছি।- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা
Advertisement
এছাড়া সারাদেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হবে ট্যানারিতে, যা গত বছর ছিল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুটের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা, যা গতবার ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা।
চামড়া সংগ্রহ নিয়ে তিন ধরনের তথ্যচট্টগ্রামে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয় নগরীর আতুড়ার ডিপোর আড়তগুলোতে। এখানকার আড়তে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা চামড়া পরবর্তীসময়ে ঢাকার ট্যানারিগুলোতে বিক্রি করা হয়। কোরবানিতে এসব আড়ত বাদেও ব্যক্তি পর্যায়ে উপজেলা ও নগরীর চাক্তাই, মাঝিরঘাট, নাসিরাবাদ শিল্প এলাকা, পাহাড়তলী, হালিশহর এলাকায় অস্থায়ীভাবে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। একইভাবে মাদরাসা ও এতিমখানায়ও চামড়া সংরক্ষণ করা হয়।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি জানিয়েছে, এবার তারা চার লাখ ১৫ হাজার পশুর চামড়া লবণ দিয়ে গুদামজাত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু-মহিষের চামড়া ছিল তিন লাখ ৬৩ হাজার।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অসতর্কতার কারণে বিলম্ব হওয়ায় সামান্য কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি মিডিয়ায় যেভাবে হাইলাইটস হয়েছে, ততটুকু নয়।-চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম
Advertisement
পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুমের (৮ জুন, কোরবানির পরের দিন) তথ্য বলছে, চট্টগ্রাম জেলায় কোরবানি পশুর দুই লাখ ৭২ হাজার ১শ চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাগলের চামড়াও রয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিসিক বলছে, চট্টগ্রাম মহানগরী ও উপজেলায় সবমিলিয়ে পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৩৭১টি পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ও মহিষের চামড়া পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৫৯১টি।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদ্য সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে এবার আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চামড়া সংগ্রহ করেছি। চট্টগ্রাম মহানগর ও ১৫ উপজেলা থেকে চার লাখ ১৫ হাজার পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরের আড়তগুলোতে এক লাখ ৭৮ হাজার এবং বিভিন্ন উপজেলায় সংরক্ষণ হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার গরুর চামড়া। এছাড়া ১০ হাজার ৫শ মহিষ ও ৫২ হাজার ৫শ ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুনপোস্তায় চামড়া এসেছে কম, পূরণ হয়নি সংরক্ষণের টার্গেটচট্টগ্রামে বিক্রি করতে না পেরে ডাস্টবিনে চামড়া‘কেউ কিনতে এলো না চামড়া, মাটিতে পুঁতে ফেলেছি’চট্টগ্রাম বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক এস এম এম আলমগীর আলকাদেরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে যে তথ্য পেয়েছি তাতে চট্টগ্রাম মহানগরসহ উপজেলাগুলো মিলে পাঁচ লাখ ৩১ হাজার গরু ও মহিষের চামড়া সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ হয়েছে।’
এবার চামড়ার কোনো দামই ছিল না। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে দামে চামড়া কিনেছেন, ওই দামও আড়তগুলো দিতে চায়নি। এতে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে গেছেন।- ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা ও মহানগরীর কয়েকটি মাদরাসায় আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৬৪০ টন লবণ বিতরণ করেছি। চামড়া সংগ্রহের উপজেলা পর্যায়ের তথ্যগুলো জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পেয়েছি। বিতরণ করা বিনামূল্যের লবণের বিপরীতে চামড়া সংগ্রহের তথ্য পাওয়া গেছে। বাদবাকি তথ্য চট্টগ্রাম চামড়া আড়তদার সমিতির মাধ্যমে পেয়েছি।’
৫০ হাজার চামড়া ভাগাড়েআড়তদারদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে চট্টগ্রামের মৌসুমি ব্যবসায়ীরা রাস্তায় কাঁচা চামড়া ফেলে দিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অল্প সংখ্যক চামড়া নষ্ট হওয়ার তথ্য দেওয়া হলেও নগরীর বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ বলছে, প্রায় ৫০ হাজারের মতো নষ্ট চামড়া ভাগাড়ে ফেলা হয়েছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদ্য সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতি বছর আমি নিজে পাঁচ হাজার চামড়া নিই। এবার নিয়েছি সাড়ে সাত হাজার। চট্টগ্রামে চামড়ার কোনো সমস্যা ছিল না। সরকার ঘোষণা করেছে লবণযুক্ত চামড়ার দাম। কিন্তু মৌসুমি ব্যাপারীরা বিষয়টি না বুঝে হয়তো বেশি দামে চামড়া কিনেছেন। তারা সে দামে বিক্রি করতে পারেননি। আবার দেরিতে আসায় গরমে ৪-৫শ চামড়া নষ্ট হয়েছে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোরবানির জন্য গরু-মহিষের যে সংখ্যা দিয়েছি, তার চেয়ে চট্টগ্রামে চামড়া বেশি সংগ্রহ হয়েছে। আমরা চট্টগ্রামে গরু-মহিষের সংখ্যা দিয়েছি পাঁচ লাখ ২৪ হাজার। বিসিকের তথ্যে আমরা জেনেছি, চট্টগ্রামে ৫ লাখ ৩১ হাজার গরু-মহিষের চামড়া সংগ্রহ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উপজেলা ওয়ারি সার্ভে করে কোরবানির পশুর চাহিদা নির্ধারণ করি। এবার চামড়া কেউ কেনেননি। বিক্রি করতে না পেরেও অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছেন। দাম না পাওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে অনীহা ছিল। এতে চামড়া নষ্ট হয়েছে।’
সরকারি নির্দেশনা ছিল উপজেলার চামড়া উপজেলায়ই সংরক্ষণ হবে। জেলার চামড়া জেলার বাইরে আসবে না। কিন্তু দেরিতে আসায় চামড়াগুলো সংরক্ষণ উপযোগী ছিল না। মূলত ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের অসর্তকতার কারণে চামড়াগুলো নষ্ট হয়েছে।- আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. মামুন ইফতেখার রহমান
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা কোরবানির পশুর বর্জ্য দিনের মধ্যেই অপসারণ করেছি। কোরবানির পরের দিন নগরীর বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, মুরাদপুর থেকে প্রায় ৪০-৫০ হাজারের মতো নষ্ট চামড়া রাস্তা থেকে তুলে ভাগাড়ে ফেলেছি।’
তবে বেশি চামড়া নষ্ট হয়নি দাবি করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম জাগো নিউজকে বলেন, ‘মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অসতর্কতার কারণে বিলম্ব হওয়ায় সামান্য কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি মিডিয়ায় যেভাবে হাইলাইটস হয়েছে, ততটুকু নয়। মহানগরের বহদ্দারহাটসহ কিছু জায়গায় যে সামান্য চামড়া নষ্ট হয়েছে, তা আমাদের আয়ত্তের মধ্যে ছিল না।’
চামড়া সংগ্রহে সরকারি অব্যবস্থাপনাগত ৭ জুন কোরবানি হলেও এর মাত্র চারদিন আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করা হয়। ফলে মনিটরিং টিম চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে কোরবানির চামড়া ব্যবস্থাপনা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সময় পায়নি। চামড়া সংগ্রহে সরকারি অব্যবস্থাপনারও অভিযোগ উঠেছে। এক জেলার চামড়া অন্য জেলায় না যাওয়া এবং উপজেলার চামড়া উপজেলা পর্যায়ে সংরক্ষণের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি। অনেকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে চামড়া নিয়ে এসেছে। আবার উপজেলাগুলো থেকেও চামড়া এসেছে নগরে।
ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারি গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে চট্টগ্রামে অনেক চামড়া নষ্ট হয়েছে। সরকার ঘোষণা দিলেও কোরবানিদাতারা চামড়ার ন্যায্যমূল্য পায়নি। এবার চামড়ার কোনো দামই ছিল না। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যে দামে চামড়া কিনেছেন, ওই দামও আড়তগুলো দিতে চায়নি। এতে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় যে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে, তাও ২ জুন বিকেলে। চট্টগ্রামের পাঁচ সদস্যের টিম বিষয়টি জানতে পারে ৩ জুন। ৭ জুন কোরবানি। মধ্যখানের তিনদিনে তারা কী প্রস্তুতি নেবেন। মন্ত্রণালয় চাইলে আরও আগে এ টিম গঠন করে দিতে পারতো। তাহলে তারা চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা নিতে পারতেন।’
চামড়া নিয়ে সরকারি অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রশাসন দায়সারা গোছের পদক্ষেপ নিয়েছে। চট্টগ্রামে কোরবানিতে চামড়ার বাজার ও নৌপথে যাতায়াত নিয়ে একটি মিটিং করেছিল। মিটিংটির সময়কাল ১৫ মিনিটের বেশি হয়নি। মানে ছবি তোলা পর্যন্ত কাজ শেষ। মন্ত্রণালয়কে দেখিয়েছেন, তারা মিটিং করেছেন। মিটিংয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। চামড়া আড়তদারদের তেমন কোনো প্রতিনিধিই ছিল না। মূলত প্রশাসন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মিটিং করে, এরপর তড়িঘড়ি করে মিটিংটি (চামড়া সংগ্রহ) করা হয়েছে। এ মিটিংয়ে কারও পরামর্শ নেওয়া হয়নি।’
কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. মামুন ইফতেখার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে কমিটি গঠনের পরপরই আমরা অনলাইনে মিটিং করেছিলাম। অর্ডার (কমিটি গঠন আদেশ) হওয়ার পরদিনই আমরা চা-বোর্ডে সবাই বসেছিলাম। চট্টগ্রামে এবার লবণের কোনো সংকট ছিল না। গরম বেশি ছিল। এতে দেরিতে আসার কারণে কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে চামড়া সংরক্ষণের প্রত্যেকটা স্পট ভিজিট করেছি। চট্টগ্রামে চামড়া নষ্ট হওয়ার একটি ঘটনা ছিল, তা হলো, কয়েকজন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে চামড়া নিয়ে এসেছিল। অথচ সরকারি নির্দেশনা ছিল উপজেলার চামড়া উপজেলায়ই সংরক্ষণ হবে। জেলার চামড়া জেলার বাইরে আসবে না। কিন্তু দেরিতে আসায় চামড়াগুলো সংরক্ষণ উপযোগী ছিল না। মূলত ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের অসর্তকতার কারণে চামড়াগুলো নষ্ট হয়েছে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বল্প সময়ের নোটিশে মনিটরিং কমিটি গঠনের সময় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এ আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘এবার শ্রমিক সংকট ছিল মারাত্মক। আবার চট্টগ্রামের আড়তগুলোতে চামড়া সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। চামড়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ। একটি চামড়াও নষ্ট হোক, তা আমরা কেউ চাইনি। মূলত চট্টগ্রামে ট্যানারি সংকট রয়েছে। একটিমাত্র ট্যানারি। তাদের টার্গেট এক লাখ চামড়া সংগ্রহ। বেশি ট্যানারি থাকলে হয়তো এ ধরনের সমস্যা থাকতো।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম জাগো নিউজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। চামড়া সংগ্রহ নিয়ে চট্টগ্রামে আমরা পাঁচটি মিটিং করেছি। উপজেলা ওয়ারি মনিটরিং টিম গঠন করেছি। মন্ত্রণালায় থেকে আমাদের নির্দেশনা ছিল, যাতে উপজেলা পর্যায়ে যে সমস্ত মাদরাসা চামড়া সংগ্রহ করে, তাদের যাতে লবণের কোনো সমস্যা না হয়। আমরা চট্টগ্রামে মাদরাসাগুলোতে সরকারিভাবে বিনামূল্যে ৯২ লাখ টাকার লবণ সরবরাহ করেছি।’
চট্টগ্রামে চামড়া সংগ্রহ নিয়ে অব্যবস্থাপনার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কোরবানির আগে থেকে কোরবানির পরেও চামড়া সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করেছি। যে কারণে আমাদের চামড়া সংগ্রহ থেকে লবণজাতকরণ পর্যন্ত তেমন সমস্যা হয়নি।’
এমডিআইএইচ/এএসএ/এমএফএ/জেআইএম