বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হলো আরেক শিশুর নাম। ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে মারা গেছে তিন বছর বয়সী সাফওয়ান আবদুল্লাহ। এতে জেলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জন।
Advertisement
রোববার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকায় নেওয়ার পথে সাফওয়ান মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকা। এর আগে সকালে বরগুনা থেকে তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, সাফওয়ান বরগুনা নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষক সাজিয়া আফরিন এবং পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন দম্পতির সন্তান। তাদের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের লাকুরতলা মল্লিকবাড়ি এলাকায়। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সাফওয়ানের বুকে ও পেটে পানি জমে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বরিশালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা অবস্থা গুরুতর দেখে শিশুটিকে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ঢাকায় পৌঁছানোর আগে পথেই তার মৃত্যু হয়।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকা জাগো নিউজকে বলেন, শিশুটিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শুরুতে অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও হঠাৎ করেই তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। সকালে শিশুটির পরিবার বরিশালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়।
Advertisement
এদিকে রোববার বরগুনা জেলায় নতুন করে আরও ৭৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৩৮ জন। বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯২ জন, আর পুরো জেলায় চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২১৫ জন। তবে বেসরকারি পর্যবেক্ষণে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জাগো নিউজকে বলেন, চিকিৎসা দিয়ে ডেঙ্গু নির্মূল করা সম্ভব নয়। এজন্য এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংস করতে হবে। এজন্য জেলাজুড়ে ব্যাপক পরিমাণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করতে হবে। পাশাপাশি মশক নিধন অভিযান আরও জোরদার করতে হবে।
নুরুল আহাদ অনিক/এফএ/জিকেএস
Advertisement