ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিধিবহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ অনুসন্ধানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট।
Advertisement
রোববার (১৫ জুন) দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট এই অভিযান চালায় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে দুদক জানায়, রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যালয় সেতু ভবনে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে জানা যায়, ‘সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য ‘পুনর্বাসন ভিলেজ’ নির্মাণের জন্য ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় এবং সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১২টি ভবনে ১ হাজার ৩৪৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়। তবে, ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া সত্ত্বেও সচিবসহ অন্যান্য পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের জন্য উক্ত ৪০ একরের মধ্য থেকে ১.১৫ একর জায়গায় পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলী নামক ৪টি ভবনে ২৮০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে মর্মে অভিযানকালে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন যুক্তরাজ্যে পাচারের অর্থ ফেরত আনতে পারবে অন্তর্বর্তী সরকার? সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি জব্দ পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্তদুদক জানায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থে অধিগ্রহণকৃত জায়গায় কীভাবে, কোন নীতিমালায় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সে সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সেতু ভবন থেকে সংগ্রহ করে দুদক টিম। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় এ প্রক্রিয়ায় অনৈতিকতার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে মর্মে টিমের নিকট প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা শেষে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
Advertisement
এর আগে গত ১৪ জুন প্রথম আলো পত্রিকায়, ‘সরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন সচিবেরা, তালিকায় কারা রয়েছেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বাসেক) পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা। তারা পর্ষদে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারি টাকায় অধিগ্রহণ করা জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ করছেন। ব্যয় করা হচ্ছে প্রকল্পের টাকা। সেই ফ্ল্যাট আবার নিজেদের নামে খুবই কম দামে বরাদ্দ নিয়েছেন সচিবেরা। বিভিন্ন সময় সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদে থাকা সচিবেরা যেমন ফ্ল্যাট নিয়েছেন, তেমনি দেওয়া হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী আমলাদের। ফ্ল্যাট পাওয়া সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার সংখ্যা ৩২।’
এদিকে ১৫ জুন সরকারি জমিতে সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হককে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব।
এসএম/ইএ/জেআইএম
Advertisement