ঝালকাঠি পৌরসভার মালিকানাধীন টাউন হলে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’ সংগঠনের ব্যানার লাগানো হয়েছে। এ নিয়ে শহরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, টাউন হলটি আগে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভাঙচুর-লুটপাটের কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল এটি। সম্প্রতি শহরের থানা সড়কের টাউন হলের নিচতলার ওই কার্যালয়ের সামনে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি ব্যানার লাগানো হয়েছে। ব্যানারটি লাগানো অবস্থাতেই রয়েছে।
‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’ সংগঠনটির কমিটিতে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদধারী নেতাকর্মীরা আছেন। তারা ব্যানার লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সব কর্মকাণ্ড শহরের আমতলা সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাইনবোর্ড (ব্যানার) লাগানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর টাউন হল দখল করে দলীয় কার্যালয় বানান দলটির নেতাকর্মীরা। এরপর ২০১৫ সালে কার্যালয়টি সংস্কার করে আধুনিকায়ন করা হয়। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন স্থানীয় কয়েকজন নেতার বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে কার্যালয়টি। মাঝে কয়েক দিন জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা কার্যালয়টিকে তাদের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করেন।
Advertisement
সম্প্রতি কার্যালয়ের সামনের দেয়ালে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, টাউন হলের জরাজীর্ণ ভবনের নিচতলায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের প্রধান দরজায় তালা লাগানো। ভাঙা জানালা দিয়ে ভেতরে বড় দুটি টেবিল ছাড়া অন্য কোনো আসবাব দেখা যায়নি। কার্যালয়ের সামনের দেওয়ালে সাইনবোর্ডের মতো একটি ব্যানার লাগানো। সেটিতে লেখা আছে, ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ, ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঝালকাঠিতে ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের’ আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুদুল ইসলাম মাইসুলের উদ্যোগে সম্প্রতি ওই ব্যানার লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ২১ এপ্রিল তাকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মাকসুদুল ইসলামের ফোনে একাধিকবার কল করলে বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Advertisement
ঝালকাঠি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন সুলতানা টাউনহলটি পৌরসভার মালিকানাধীন স্বীকার করে বলেন, ওটাতে কে বা কারা একটি ব্যানার লাগিয়েছে তা জানি না। কেউ আমাদের সঙ্গে আলাপও করেনি। পৌর পরিষদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সৈয়দ হোসেন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাইনবোর্ড (ব্যানার) লাগানোর বিষয়ে তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. আতিকুর রহমান/এসআর/এমএস