সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
Advertisement
তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকার করেছিল নিবর্তনমূলক সব আইন বাতিল করবে। কিন্তু ৯ মাসেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি। বরং নতুন করে গণমানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার কলাকৌশল শুরু হয়েছে। সাইবার সুরক্ষার নামে নতুন করে ফ্যাসিবাদীর ধারণা দেওয়া হচ্ছে।
রোববার (১৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট ও প্রযুক্তিসেবা নিয়ে রাজনৈতিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে, গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে, মত প্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ন করে, আমাদের পরিবার বা সমাজের নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করে যেসব আইন সেগুলো বাতিল হবে- এটা সাধারণ নাগরিকদের চাওয়া ছিল। কিন্তু গত ৯ মাসেও কেন এসব আইন বাতিল হলো না এ ব্যাপারে সরকারের স্পষ্ট কোনো উত্তর নেই।
Advertisement
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া বলেন, এই সরকারকে আমরাই ম্যান্ডেট দিয়ে ক্ষমতায় রেখেছি। তারা অঙ্গীকার করেছিলেন নিবর্তনমূলক সব আইন বাতিল করবেন। কিন্তু ৯ মাসেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়নি।
আম-জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সাধনা মহল বলেন, সাইবার সুরক্ষা নামে নতুন করে ফ্যাসিবাদীর নতুন ধারণা দেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতি অনিয়ম না কমে আগের থেকে বেড়েছে।
আরও পড়ুনদিনে কত ঘণ্টা এসি চালানো উচিত?এবার স্ক্রিনশট থেকেই লোকেশন খুঁজে দেবে গুগল ম্যাপবিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আমরা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করি। কিন্তু ভার্চু্য়াল ওয়ার্ল্ডে আমাদের নিরাপত্তার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। যে কোনো সময় যে কোনো ইস্যুতে কোনো মানুষকে ইচ্ছা করলে সাইবার বুলিং করে তার চরিত্র হনন করতে পারে। একজন নাগরিকের সারা জীবনের অর্জন কয়েক মিনিটের মধ্যে শেষ করে দিতে পারে। ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
সাইবার অধ্যাদেশ ২০২৪ বিষয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, যেটি প্রকাশ করা হয়েছে সেটিতে নাগরিকের সুরক্ষার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই, অরক্ষিত। রাষ্ট্রের কাজের সুবিধার জন্য নিজের মতো করে সংস্কার করা হয়েছে। এটাকে নাগরিকের সুরক্ষার উপযোগী করে প্রকাশ করা সময়ের দাবি।
Advertisement
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আমরা সবাই দেশের আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ সেবার মান উন্নয়নের কথা বলি। এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে যারা জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলেন, তাদের কণ্ঠরোধ করার নতুন কৌশল সৃষ্টি হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক।
এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, গত আট-নয় মাস ধরে শুনছি ইন্টারনেটের দাম কমছে, উন্নয়ন হচ্ছে, বাস্তবে কিছুই নেই।
বাংলাদেশ ন্যাপ মাহসচিব এম গোলাম মোস্তাফা ভূঁইয়া বলেন, এরই মধ্যে শোনা গেছে গত ৯ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। আমাদের অধিকার আছে এই লুটপাটের জবাবদিহি চাওয়ার।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাদের আলমাস, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, লেবার পার্টির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।
আলোচনা সভায় আইসিটি ও টেলিকম খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, স্টেকহোল্ডার ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কেএসআর/জেআইএম