ক্যাম্পাস

সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ঢাবি সাদা দলের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ঢাবি সাদা দলের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত হত্যাকারীকে শনাক্ত করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হলে কঠোর আন্দোলনের পথে হাঁটবে তারা, এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছে দলটি।

Advertisement

রোববার (১৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ আলটিমেটাম ঘোষণা করা হয়।

মানববন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সাম্য মারা যায়নি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচদিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রকৃত খুনিকে খুঁজে বের করা হয়নি। বরং আমরা এক ধরনের আইওয়াশমূলক গ্রেফতারের নাটক দেখতে পাচ্ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি, প্রকৃত হত্যাকারীকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একটি মহল হত্যার মোটিভকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সাফ জানিয়ে দিতে চাই, আগে সাম্য হত্যার বিচার হোক, তারপর অন্য প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে। সাম্যকে টার্গেট করেই হত্যা করা হয়েছে, সাধারণ কেউ এমনভাবে আঘাত করতে পারে না। সরকার যদি প্রকৃত বিচার নিশ্চিত না করে, তবে আমরা রাজপথে নেমে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

Advertisement

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত, একজন নাগরিক হিসেবেও ব্যর্থ বোধ করছি। সাম্য হত্যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে আমাদের ক্যাম্পাস নিরাপদ নয়। এই হত্যার পেছনে কারা, সেটা বের করতে না পারলে আমরা ভবিষ্যতে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়বো।

আরও পড়ুন:

ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যা: গ্রেফতার তিনজন রিমান্ডেজাতীয় সংগীত-পতাকা নিয়ে কথা বলায় সাম্যকে হত্যা করা হয়েছেআসামিদের গ্রেফতার দাবিতে শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

তিনি আরও দাবি করেন, গত বছর যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছে, সাম্য তার বিরোধিতায় ভূমিকা রেখেছে। দেশ পুনর্গঠনের পথে সেই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। সাম্য ও আরও অনেকে তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। আমরা এমন অপশক্তির অবাধ বিচরণে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিচার দাবি করছি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাবির শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত হই যখন দেখি, আমার ছাত্র অন্যের হাতে প্রাণ হারাচ্ছে। এটি কোনো তাৎক্ষণিক ঘটনা নয় বরং দীর্ঘ সময় ধরে একটি সংগঠন ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ করে এসেছে এবং অন্যদের কার্যক্রম দমন করেছে। এখন সেই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলেও, সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এই পরিবর্তনকে দমন করার জন্য।

Advertisement

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, আইবিএ’র অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম শহিদুল ইসলাম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আলী জিন্নাহসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।

গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এএফ রহমান হলে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। হত্যাকাণ্ডটি বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এফএআর/এসএনআর/জেআইএম