দুদিনে ২ নবজাতকের মৃত্যু, মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশের অভিযোগ

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করায় দুদিনে দুই নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল মালিক ও কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

গত শুক্র ও শনিবার (১৬ ও ১৭ মে) উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার সিংগাইর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা জানান, শুক্রবার মধ্য সিংগাইর এলাকার মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী ও শায়েস্তা ইউনিয়নের চর লক্ষ্মীপুর এলাকার মো. ফিরোজের স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার বিকেলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই নারী পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। পরে দুই নবজাতকের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ ২৫০ মিলির ট্যাজিড ইনজেকশন পুশ করেন নার্স। এরপর থেকে দুই নবজাতকের হার্টবিট কমে যায়। এদের মধ্যে একজনকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে। অপরজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে মারা যায়।

মৃত এক নবজাতকের বাবা মো. ফিরোজ বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে ডা. শামিমা রহমান আমার স্ত্রীকে অস্ত্রোপচার করেন। পরে আমি পুত্র সন্তানের বাবা হই। আজ সকালে হাসপাতালের নার্স আমার ছেলেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন। এর এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছেলের মৃত্যু হয়।’

মো. মাজেদুল ইসলাম নামে আরেক নবজাতকের বাবা বলেন, ‘জন্মের পর আমার ছেলে সুস্থ ছিল। আমাদের সামনে নার্সরা একটি মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর ছেলের হার্টবিট কমে যায়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এটি মৃত্যু নয়, হত্যা। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে সিংগাইর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মিজানুর রহমান লিটন বলেন, ‘এটি একটি দুর্ঘটনা। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাফসান রেজা বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দ্রুত ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশনে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মো. সজল আলী/আরএইচ/জেআইএম