শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট পরিসংখ্যান মোটেই ভালো না। দেশের মাটি ও শ্রীলঙ্কায় ২৬ টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র একটিতে। সেটা ২০১৭ সালে কলম্বোর পি সারা ওভালে নিজেদের শততম টেস্টে। লঙ্কানদের ৪ উইকেটে হারিয়ে ওই একমাত্র সাফল্যর স্বাদ পেয়েছিল টাইগাররা।
Advertisement
অ্যনদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার টেস্ট জয় ২০টি। ৫টি টেস্ট অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কার মাটিতে দুটি টেস্ট (২০১৩ সালের মার্চে গলে আর ২০২১ সালের এপ্রিলে পাল্লেকেল্লেতে) ড্র করার রেকর্ড আছে টাইগারদের। এর বাইরে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ সালে চট্টগ্রামে ৩টি টেস্ট হার এড়িয়ে অমীমাংসিত রেখেছে টিম বাংলাদেশ।
ওপরের ছোট্ট পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে, টেস্টে সামগ্রিকভাবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশে রেকর্ড খুব খারাপ। তবে এবার যে দলটি শ্রীলঙ্কা সফর করছে, সে দলের ৪ ব্যাটারের লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট পরিসংখ্যান কিন্তু বেশ ভালো। কারা সেই ৪ জন? নামগুলো হলো-মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, লিটন দাস আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ৪ জন এখনো দলের সঙ্গী। চারজনেরই আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু গল টেস্টে একাদশে থাকার কথা।
টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে যে ব্যাটারের সর্বাধিক ১৩ সেঞ্চুরি, সেই মুমিনুল হকের ৪টি শতকই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর মধ্যে তিনটি (১০০*, ১৭৬, ১০৫) দেশের মাটিতে এবং চট্টগ্রামে। আর একটি শ্রীলঙ্কায় (২০২১ সালের এপ্রিলে পাল্লেকেল্লেতে ১২৭)। টেস্টে বাংলাদেশের আরেক সফল ব্যাটার ও দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সদস্য মুশফিকুর রহিমের ১১ টেস্ট সেঞ্চুরির সর্বাধিক ৩টি শ্রীলঙ্কার সাথে।
Advertisement
দুটি দেশের মাটিতে (২০২২ সালে চট্টগ্রামে ১০৫ ও একই বছর মিরপুরের শেরে বাংলায় ১৭৫*) আর একটি শ্রীলঙ্কার মাটিতে (২০১৩ সালের ৮ মার্চ গলে ২০০)। এছাড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের টেস্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে লম্বা ইনিংস এই শ্রীলঙ্কার সাথে। ২০২২ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে লিটন দাসের ১৪১ রানের বড় টেস্ট ইনিংস। আর নাজমুল হোসেন শান্ত ২০২১ সালে পাল্লেকেল্লেতে লঙ্কানদের সাথে উপহার দিয়েছেন ক্যারিয়ারসেরা ১৬৩ রানের ইনিংস। বর্তমান দলের কোনো বোলারের পরিসংখ্যান অবশ্য ওই ৪ ব্যাটারের মতো ভালো না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৯ টেস্টে পেয়েছেন ৩০ উইকেট। সেরা ৫/৭২।
অন্যদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ৮ টেস্টে ২৪ উইকেট। এ অফস্পিনারের লঙ্কানদের সাথে সেরা বোলিং ৪/৭৪।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য ব্যাটারদের ট্র্যাক রেকর্ডকে ভালো খেলার রসদ মনে করছেন। কিন্তু গল টেস্টের শেষ পরিণতি কিন্তু আশার আলো দেখাচ্ছে না। ইতিহাস জানাচ্ছে, এই গল স্টেডিয়ামে ২০১৭ সালের মার্চে সর্বশেষ টেস্ট খেলতে নেমে লঙ্কানদের কাছে নাকানি চুবানি খেয়েছিল মুশফিকুর রহিমের দল। ২৫৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। যদিও শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ড্র করার রেকর্ডটি এই গলের ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামেই। সেটা ২০১৩ সালে। মুশফিকুর রহিমের অসাধারন ডাবল সেঞ্চুরি (২০০), মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০, নাসির হোসেনের ১০০ আর মুমিনুল হকের হাফসেঞ্চুরিতে (৫৫) ভর করে টেস্ট ড্র করার কৃতিত্ব দেখায় টাইগাররা।
কিন্তু সে কৃতিত্ব ম্লান হয়ে যায় ২০১৭ সালে। কেন হবে না? ওপরে যাদের কথা বলা হলো, তাদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম ছাড়া কেউ গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ টেস্টে কিছুই করতে পারেননি। মুমিনুল আর লিটন দুজনই ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন। মুমিনুল যথাক্রমে ৭ ও ৫ রান করে আউট হয়েছিলেন। লিটন দাসের স্কোর ছিল ৫ ও ৩৫।
Advertisement
মুশফিকুর রহিম প্রথম ইনিংসে ৮৫ আর পরের ইনিংসে ৩৪ রান করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথম ইনিংসে লঙ্কান ব্যাটার কুশল মেন্ডিসের ১৯৪ রানের অসাধারণ ইনিংস এবং শেষ পর্যন্ত বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের (৬/৫৯) স্পিন ঘূর্ণির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয়, এবার গলে কী করে শান্তর দল!
এআরবি/এমএমআর/এমএস