জাতীয়

রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে

রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে

আগামীর রাজনৈতিক নীতি প্রণয়ণে পরিবেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিকল্প নেই। কোটি মানুষের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ঢাকা এবং পাশ্ববর্তী শিল্পাঞ্চলগুলো তথা গোটা বাংলাদেশের মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের স্বার্থে পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রনয়নের দাবি জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনরা।

Advertisement

শনিবার (১৭ মে) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলিনায়তনে ‘পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও তাদের পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পল্যুশন স্টাডিস-ক্যাপস), পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’, সামাজিক আন্দোলন ‘নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ-নাবিক’ এবং সেন্টার ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-সিজিডি যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাবিকের সহ-সভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সাল।

এ সময় ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দূষণের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ প্রায়শই প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। একটি পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তাদের সদিচ্ছাই পারে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে।

Advertisement

বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। বিল, ডোবা, পুকুরসহ সব জলাশয় দূষণমুক্ত রাখতে হবে এবং খেলার মাঠগুলো উদ্ধার করতে হবে। দেশের ২০ কোটি মানুষ যদি দুটি করেও গাছ লাগায়, তাহলে ৪০ কোটি নতুন গাছ লাগানো সম্ভব। নেতাদের নিজেদের গাছ লাগাতে হবে এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরণ, পরিবেশবান্ধব কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর ওপর জোর দেন, যাতে সমাজের সব স্তরের মানুষ তা ব্যবহারে আগ্রহী হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি শহর পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে, অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, নীতিমালা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি। বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে, ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং বাড়ি নির্মাণে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক একটি বসবাসযোগ্য ও সুপরিকল্পিত নগরীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শহরকে যেমন তেমন করে গড়ে তোলা যাবে না। গ্রিন করিডোর তৈরি, পরিবেশবান্ধব যানবাহন ও সাইকেলের জন্য আলাদা লেন, ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু এবং উঁচু ভবন থেকে ময়লা ফেলা বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।

Advertisement

আরএএস/এএমএ/এমএস