নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুদ রানা (৩৮)। কিন্তু তিনি ঢাকার পল্টন থানার একটি মামলায় আড়াই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।
Advertisement
শুক্রবার (১৬ মে) বিষয়টি জানাজানি হলে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। গত ২৩ এপ্রিল সাজার বিষয়টি গোপন করে জোরপূর্বক মো. মাসুদ রানাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে।
আসামি মো. মাসুদ রানা চাটখিল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দরপুর গ্রামের মকবুল আহাম্মদের ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চাটখিল উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে চাটখিল পৌর যুবদলের আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুবদল নেতা মাসুদ রানা একমাস আগে যুবলীগ নেতা মো. ফরিদ প্রকাশ লুঙ্গি ফরিদের মির্জাপুর কৃষক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য হয়ে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন।
Advertisement
আদালত সূত্র জানায়, মাসুদ রানা ঢাকার পল্টন থানায় ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দায়ের হওয়া ১০ নম্বর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ওই মামলায় ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে দুই বছর ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করে আদালত।
জানতে চাইলে সাজার রায়ের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আসামি মো. মাসুদ রানা।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাজার রায়ের বিষয়টি সত্য। আমি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছি। আদালতে এখনো ওই আপিলের নিষ্পত্তি হয়নি। আশা করি আপিলের রায়ে আমি খালাস পাবো।
সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কবিরহাট উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচনের সময় এ বিষয়ে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের কেউ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তাই সভাপতি পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মাসুদ রানাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
Advertisement
চাটখিল উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিনু প্রভা ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচনে আমি কোনো দায়িত্বে ছিলাম না। তবে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে সাজার তথ্যের প্রমাণ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
জেলা সমবায় কর্মকর্তা মুরাদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বিআরডিবির কেন্দ্রীয় সমিতিগুলোর নির্বাচন, অডিট, বাজেটসহ আনুষঙ্গিক কাজ আমরা করলেও নির্বাচনের আপিল শুনানি করেন বিভাগীয় যুগ্ম-নিবন্ধক। তাই এ বিষয়টি আমার জানা নাই।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ৫ আগস্টের দিন চাটখিল থানা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ায় অনেক ডকুমেন্টস নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও যুবদল নেতার সাজা পরোয়ানার বিষয়টি অনলাইনে পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এএসএম