দেশজুড়ে

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক নেতা, অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক নেতা, অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

যশোরের মনিরামপুরে এক শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষকের এক সহকর্মী। মঙ্গলবার (১৩ মে) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না আকস্মিক ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে তার কাছে এই অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ইউএনও বিদ্যালয় ত্যাগ করার পর ওই শিক্ষককে মারধর করেন অভিযুক্ত শিক্ষক নেতা।

Advertisement

সহকর্মীকে মারধর করা ওই শিক্ষকের নাম মজনুর রহমান। তিনি উপজেলার দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। মজনুর বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মনিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকও। মারধরের শিকার শিক্ষক রবিউল ইসলামও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম রাতে মনিরামপুর থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন। এরআগে তিনি জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

মারধরের শিকার শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নিয়ম মেনে স্কুলে আসেন না মজনুর রহমান। তিনি বিদ্যালয়ে এলেও ক্লাস না নিয়ে হাজিরা খাতায় সই করে দুই এক ঘণ্টা অফিসে বসে চলে যান।

Advertisement

রবিউল ইসলাম বলেন, গতকাল ইউএনও আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সবকিছু এলোমেলো পান। তখন বিদ্যালয়ে ছিলেন না মজনুর রহমান। আমি ইউএনওকে মজনুর বিষয়ে সবকিছু জানাই। ইউএনও বিদ্যালয়ে থাকতেই খবর পেয়ে মজনুর রহমান বিদ্যালয়ে আসেন। ইউএনও চলে যাওয়ার পর মজনু বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। আমি হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছি। সেখানে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ইউএনওর কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এরপর রাত ১০টার দিকে থানায় মজনুর বিরুদ্ধে এজাহার জমা দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে মজনুর রহমান বলেন, ‌‘মঙ্গলবার আমার তিনটা ক্লাস ছিল। সবগুলো ক্লাস নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাইরে গিয়েছিলাম। ইউএনও বিদ্যালয়ে আসার খবর শুনে ফিরে এসেছি।’

সহকর্মীকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাথা ঠিক ছিল না। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার বলেন, মজনুর রহমান বিদ্যালয়ে আসেন। ব্যস্ততা দেখিয়ে তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।

Advertisement

ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক মজনুর রহমানকে প্রথমে পাওয়া যায়নি। তিনি পরে এসেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি চলে আসার পর শিক্ষক মজনুর রহমান বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষক রবিউল ইসলামকে মারধরের বিষয়ে লিখিতভাবে জানতে পেরেছি। রবিউল ইসলাম লিখিত অভিযোগের সঙ্গে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রের কপি জুড়ে দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবো।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে এজাহার পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম