মোহিনী, শুনছো?সারাদিনের ক্লান্ত রোদে পোড়া এই নগরীর শেষে, যখন রাত নামে তীব্র গরমে,তুমি তখন বেগুনি-সাদা শাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকো।তোমার ওই শাড়ি-ব্লাউজের মিলনরঙে আমি হারিয়ে যাইবারবার, যেন প্রথমবার।
Advertisement
তোমার দিকে তাকাই, আর ধীরে ধীরে ভেসে যাইযাত্রাবাড়ীর টনি টাওয়ারের নিচে অপেক্ষমান সেই তুমি,বাঁকা কাঁধ, চুপচাপ চাহনি, আধা-হাসি মুখে যাপিত মায়া।সে কী মুগ্ধতা! সে কী প্রতীক্ষা!
তারপর?রিকশার সেই চুপচাপ মুহূর্তে, তুমি আমার কাঁধে মাথা রাখো,আমি চুপ করে থাকি, তুমি শব্দহীন সংলাপ লেখো।এসব কথা, এই খুনসুটি, এই নিঃশব্দ প্রেমআমি কেবল তোমাকেই বলছি, মোহিনী।
তোমাকে হেফজ করতে, ভেতর জুড়ে জড়িয়ে রাখতেআমার কত সময় গেছে, কত রাত্রি নিঃশব্দে পুড়েছে।ভুলে যেও না, এই আমি,তোমাকে যেভাবে জেনেছি, ভালোবেসেছি, কেউ পারেনি, পারবেও না।
Advertisement
আমি যদি একদিন চলে যাই,তুমি আর তুমি থাকবে না।তখন তুমি বুঝবেশরীর, মন, দেহ—এসব ছাড়াওকিভাবে মানুষ বাঁচে, কিভাবে জীবন চলে।
তুমি সুখ পাবে কিন্তু সেই সুখে খালিপনা থাকবে।তুমি খুঁজবে আমার শরীর, আমার স্পর্শ,আমার যত্নে ভেজা গলা,আর সেই অপরিসীম ভালোবাসা—যা ছিল কেবল তোমার জন্য।
তখন প্রশ্ন করবে নিজেকেতোমার প্রয়োজন কী?মানুষ জিজ্ঞেস করবে, কী চাও তুমি?
তুমি বলবেআমি শুধু ভালো থাকতে চাই, এই জীবনের একান্ততম চাহিদায়।একটা শাড়ি পরবো, তার আঁচলে জড়িয়ে থাকবে বিকেলের আলো,তার ভাঁজে থাকবে আমার চুপচাপ স্বপ্নেরা।
Advertisement
আমি চাইএকজন কবি,যিনি আমার রূপ দেখে শব্দ হারিয়ে ফেলবেন,যার কলমে আমি শুধু নারী নই, এক অপার্থিব অনুভব।
একজন প্রাবন্ধিক,যিনি আমার চোখের গভীরতা নিয়ে রচনা করবেন দীর্ঘ বিশ্লেষণ,যার অনুচ্ছেদে আমি হবো এক আশ্চর্য জিজ্ঞাসা—অসীম ও অনুচারিত।
একজন সাহিত্যিক,যিনি আমার হাসিতে হারিয়ে যাবেন বারবার,যার ভাষায় আমি হবো চরিত্র নয়, চরিত্রচ্যুত প্রেম।
আর হ্যাঁ!সম্প্রতি জমিজমা নিয়ে কিছু বিতর্ক চলছে,আমি চাই একজন আইনজ্ঞ,যিনি আমার কথাগুলো বুঝবেন নথিপত্র ছাড়াই,যিনি আমার পক্ষে লড়বেন কেবল ন্যায় আর মমতায়।
শেষে চাই একজন প্রেমিক—যিনি শুধু আমার শরীরকে নয়,আমার আত্মাকেও আদরে রাখবেন,ভালোবাসা দেবেন নিঃশব্দে, যত্নের মতন ধীরে ধীরে।
মানুষ বুঝে যাবে...তুমি এখনো আমাকেই চাও,আমাকেই ভালোবাসো।
এসব কথাআমি কেবল তোমাকেই বলছি, মোহিনী।
এসইউ/এএসএম