অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আরও তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মধ্যরাত থেকে চলা এই হামলায় কমপক্ষে আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৫ জনই উত্তর গাজার বাসিন্দা। খবর আল জাজিরার।
Advertisement
দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় এবং নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার কয়েক ঘন্টা পর আবারও তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। দক্ষিণ গাজার হাসপাতালে হামলায় চিকিৎসা নিতে আসা একজন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সফরের অংশ হিসেবে প্রথমেই সৌদিতে পা রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি আরব সফররত এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংঘাতের অবসান ঘটাতে কাজ করছেন। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এমন কোনো পরিস্থিতি আসবে না যেখানে আমরা যুদ্ধ বন্ধ করে দেব।
এদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বসবাসরত প্রায় ২১ লাখ ফিলিস্তিনি দুর্ভিক্ষের ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন বিষয়ক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)।ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধের মুখে ত্রাণ ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা ঢুকতে না পারার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা চরম খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংস্থাটি।
Advertisement
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন বা আইপিসি মূলত জাতিসংঘ, দাতা সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের সরকারের সমন্বয়ে পরিচালিত একটি সংস্থা, যাদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহল একটি এলাকায় দুর্ভিক্ষ হতে যাচ্ছে কি-না, সেটার প্রাথমিক মূল্যায়ন করে থাকে।
সোমবার প্রকাশিত আইপিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকেই গাজার খাদ্য পরিস্থিতিতে বড় ধরনের অবনতি ঘটেছে।
বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষ শুরু না হলেও পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে, ইসরায়েল এবং হামাসের দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে গাজায় সাময়িক স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে নতুন করে যে বৈরিতা দেখা যাচ্ছে, সেটা গাজাবাসীকে পুনরায় উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়। এছাড়া ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে হামাস। গত দেড় বছরে জিম্মি ইসরায়েলি নাগরিকদের অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন। তবে এখনো প্রায় ৫৯ জন জিম্মি হামাসের হাতে বন্দি রয়েছেন বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২৪ জনের মতো জীবিত রয়েছেন।
Advertisement
অপরদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন আহত হয়েছেন। তবে সরকারি মিডিয়া অফিস মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বলে জানিয়েছে। কারণ নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার মানুষকে এখন নিহতের তালিকায় রাখা হয়েছে।
টিটিএন