খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি গ্রেফতার, থানা ঘেরাও

নাশকতার মামলায় নেত্রকোনা খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি এবং জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু সোমবার (১২ মে) বিকেলে আটকের পরপরই তার মুক্তির দাবিতে নেত্রকোনা মডেল থানা ঘেরাও করেন খেলাফত আন্দোলন ও খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

সোমবার রাত একটা পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ করেন। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২২ মে শহরের ছোট বাজার এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেই ঘটনায় সোমবার সকালে মামলা করা হয়। সদর উপজেলার আমলি কেশবপুর গ্রামের মান্নান মিয়ার ছেলে তাঁতিদল নেতা মো. সুমন মিয়া (৩৯) মামলাটির বাদী। মামলায় নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠন এবং নানা শ্রেণি-পেশার ২৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৮০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।

ওই আসামিদের মধ্যে খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে ৯৩ নম্বর আসামি করা হয়। এরপর সোমবার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে শহরের কুড়পার এলাকা থেকে পুলিশ আনোয়ারকে গ্রেফতার করে। এর প্রতিবাদে এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সন্ধ্যা থেকে রাত একটা পর্যন্ত সংগঠনের নেতা-কর্মীরা থানা ঘেরাও করে আন্দোলন করেন। তাকে মুক্তি না দিলে খেলাফত আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে জানা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই আসামিকে থানা থেকে ছাড়া হয়নি। মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। তার জামিন না হলে তারা মঙ্গলবার জেলা শহরের কুড়পাড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করার কথা রয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের।

খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব সম্পাদক গাজী মোহাম্মাদ আবদুর রহিম বলেন, খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের জেলা শাখা সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তিনি জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নেরও সভাপতি। তাকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে একজন তার বিরুদ্ধে থানায় নাশকতার মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। ওই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত মুক্তি দাবি করছি। তাকে যদি দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে আমরা বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি হাতে নিতে বাধ্য হবো। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের কুড়পাড় এলাকায় ডিসি অফিসের সড়ক অবরোধ করা হবে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, সুমন মিয়া নামের ইউনিয়ন তাঁতিদলের এক নেতা বাদী হয়ে থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৯৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। আনোয়ার হোসেনের মুক্তি দাবিতে খেলাফতের নেতা-কর্মীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন করছেন। তাদের বুঝিয়ে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এইচ এম কামাল/এফএ/জেআইএম