দেশজুড়ে

ফরিদপুরে বিক্রি হওয়া শিশু গেলো মায়ের জিম্মায়, শুনানি ২ জুন

ফরিদপুরে বিক্রি হওয়া শিশু গেলো মায়ের জিম্মায়, শুনানি ২ জুন

ফরিদপুরে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে দেড়লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া শিশু তানহা আক্তারকে (১) মা পপি বেগমের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত। আগামী ২ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ আদালতের পরবর্তী শুনানি বা ধার্য তারিখ পর্যন্ত শিশুটি মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে আদালত নির্দেশ দেন।

Advertisement

সোমবার (১২ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি এই নির্দেশ দিয়েছেন। পরে শিশুটিকে মা পপি বেগমের কোলে তুলে দেওয়া হয়।

এসময় সেখানে হৃদয়বিদারক এক দৃশ্য সৃষ্টি হয়। শিশুটির আপন মা এবং পালক মা-বাবা ও স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে সেখানে।

এর আগে রোববার বিকেলে শিশুটিকে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্প উদ্ধার করে নগরকান্দা থানায় হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে হাজির করা হয় শিশুটিকে।

Advertisement

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, মামলার বাদী শিশুটির মা পপি বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ শিশুটিকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়েছেন। পরবর্তীতে আদালতের আদেশক্রমে র্যাব বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে নগরকান্দা থানা পুলিশের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দিয়েছেন। আশা করি আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি বলেন, যদিও আজ মামলার ধার্য তারিখ ছিল না, তবে ভিকটিমের নামে সার্স ওয়ারেন্ট ছিল। দুধের বাচ্চা হওয়ায় পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত শিশু তানহা মায়ের জিম্মায় থাকবে। পরবর্তীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেন শিশুটির মা পপি বেগম। তবে মামলায় সন্তান বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় এবং ফিরে পেতে আর্জি জানানো হয়। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল সার্স ওয়ারেন্টের মাধ্যমে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য নগরকান্দা থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত।

তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো এবং স্বামী ও ননদ মিতা বেগম বিভিন্ন সময় তাকে নির্যাতন করতে থাকেন। এর মাঝে তাদের একটি মেয়ের জন্ম হয়। পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে তাদের তালাক হয়। তালাকের পর শিশু তানহাকে জোর করে রেখে দেন বাবা এবং মায়ের অজান্তে শিশুটিকে অন্যত্র বিক্রি করে দেন।

Advertisement

এন কে বি নয়ন/এফএ/জেআইএম