আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করার পর এবার দলটির নিবন্ধন স্থগিত করলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে দলটি সামনে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
Advertisement
সোমবার (১২ মে) রাতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে কমিশন।
চারঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত সোয়া ৯টায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের আলোকে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে ইসি।’আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি আওয়ামী লীগ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সব প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধজাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন প্রথা চালু করে নির্বাচন কমিশন। গত চারটি নির্বাচনে পঞ্চান্নটি নিবন্ধন পেয়েছিল। দেশের প্রাচীনতম দলটির নিবন্ধন নম্বর ৬, প্রতীক নৌকা। নিবন্ধন স্থগিতের মাধ্যমে দলটির ভোটে অংশগ্রহণ বন্ধ হয়ে গেল। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৪৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হলো। এর আগে জামায়াতসহ পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
Advertisement
বৈঠকে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।বৈঠকে নিবন্ধন স্থগিতের আইনি দিকগুলো তুলে ধরেন তারা।
নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর ৯০ জ অনুচ্ছেদ দফা ১ (খ) অনুযায়ী সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগের আমলে নিবন্ধন শর্তপূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করা হয়।
অভ্যুত্থান দমাতে ‘গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
Advertisement
সদ্য সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারার আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
দলটিকে এখন জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। সেজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন এরই মধ্যে সংশোধন করা হয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন আসায় এখন নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়েও সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে দেশের প্রাচীনতম দলটি সামনে কোন ধরনের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
এমওএস/এমএএইচ/এমএস