ফরিদপুরে সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হতেই হাতের টানে উঠে যাচ্ছে পাথর ও পিচের কার্পেটিং। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। কোথাও কোথাও ময়লার ওপরই দেওয়া হয়েছে পিচ ঢালাই। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোড় থেকে মৃধা ডাঙ্গী পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ ৮ মে শেষ হয়। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার একদিনের মাথায় হাতের টানেই উঠে যায় পাথর ও পিচের কার্পেটিং।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাইচার মোড় থেকে মৃধা ডাঙ্গী (গোপালপুর লঞ্চঘাট মোড় থেকে মাথাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরমধ্যে ১ কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ হয়েছে। আর এক কিলোমিটার সড়ক সিলকোর্ট হওয়ার কথা। কাজটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়ক মেরামত করা হয়েছে। কোথাও কোথাও ময়লার ওপরই দেওয়া হয়েছে পিচ ঢালাই। ফলে উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ। পথচারীদের পায়েও লেগে যাচ্ছে পিচ। আবার যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। এমনকি হাতের টানে অথবা পা দিয়ে ঘষলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।
Advertisement
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুরাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সড়কটি তিন গ্রামের প্রধান যাতায়াতের পথ। কাজের মান খুবই নিম্নমানের হয়েছে। সড়কে নিয়ম মতো ট্যাককোর্ট (বিটুমিন-তেল) ব্যবহার করা হয়নি।
চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ খান জাগো নিউজকে বলেন, সড়কটি ৭-৮ মাস আগে শুরু করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। তখন মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের পর কাজ করার একদিনের মাথায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। নিচে খোয়ার বদলে পোড়া মাটি দেওয়া হয়েছে। এক কথায় নিম্নমানের কাজ হয়েছে। এর একটি বিহিত হওয়া দরকার।
ঠিকাদার নিজাম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, কাজটি আমার ছেলে নাসিম আহমেদ মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কিনে করছেন। তবে কাজে একটু সমস্যা হয়েছিল। যেখানে সমস্যা ছিল সেখানে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাবির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মোট দুই কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এক কিলোমিটার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি এক কিলোমিটার সিলকোর্টের কাজ চলমান। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলাচলের কারণে এমনটা হতে পারে। ঠিকাদারকে কাজের বিল পরিশোধ করা হয়নি। তারপরও কোনো ত্রুটি থাকলে ঠিকাদারকে দিয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে।
Advertisement
জানতে চাইলে চরভদ্রাসন উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) আব্দুস ছাত্তার জাগো নিউজকে বলেন, সড়ক কার্পেটিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত দিয়ে টেনে তুললে উঠবে এটা স্বাভাবিক। এজন্য সময় দিতে হবে। কমপক্ষে পাঁচদিন পর হাত দিয়ে আর টানাটানি করলেও উঠবে না। কাজের পর বিটুমিনে হিট থাকে, কয়েকদিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে। তারপরও কাজের মান ১৯/২০ হতে পারে। অভিযোগের পর উপসহকারী প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, এমন অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি দেখা ও সঠিক সমাধানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/জেআইএম