টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চুরি হওয়া দুইটি গরু উদ্ধারের পর মালিককে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
গরুর মালিক উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের ফজলু শেখের স্বজনরা এমন অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের ফজলু শেখের বাড়ির গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে একটি দেশি গাভি ও একটি বাছুর চুরি হয়। এ ঘটনায় গরুর মালিক ফজলু শেখ মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে ঘটনার দিন গভীর রাতে পুলিশ উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের কদিম ধল্ল্যা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে চুরি হওয়া দুই গরু উদ্ধার করে। একই সঙ্গে চুরির অভিযোগে জেলার কালিহাতি উপজেলার মালতী দক্ষিণপাড়া গ্রামের তোফাজ্জাল হোসেন তোতার ছেলে আল আমিনকে (৩৫) আটক করে। এসময় চুরির গরু বহনকারী ট্রাকও জব্দ করা হয়। পরে ফজলু শেখ উদ্ধার হওয়া গরুকে নিজের বলে শনাক্ত করলে আটক আল আমিনকে চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
Advertisement
উদ্ধার হওয়া গরু দুটি বাজার মূল্য আনুমানিক ২ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী হাসান উদ্ধারকৃত গরু ফেরত দিতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গরুর মালিক ফজলু শেখের স্বজনরা জানান, দুজন বিএনপি নেতা ও ফজলু শেখের ভাগনে উজ্জ্বল সিকদারের উপস্থিতিতে উপজেলার ভাউরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন তার ব্যক্তিগত ফোন দিয়ে এসআই আলী হাসানের সঙ্গে লাউড স্পিকারে কথা বলেন। এসময় বাছুরসহ গাভি মালিককে ফিরিয়ে দিতে এসআই আলী হাসান ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। উজ্জ্বল সিকদার ফারুক হোসেনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলেও আলী হাসান রাজী হননি।
উজ্জ্বল সিকদার জানান, তারা এসআই আলী হাসানকে গরু ফেরত দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি না দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চান। টাকা দিলে থানা থেকে গরু দিবেন তিনি। না দিলে আদালত থেকে নিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। লাউড স্পিকার দিয়ে ফোনে কথা বলার সময় আলী হাসান টাকা চেয়েছেন। তিনি সেখানে উপস্থিত থেকে টাকা চাওয়ার কথা শুনেছেন।
Advertisement
বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন বলেন, গাভি ফেরত দিতে এসআই ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। তারা ১০ হাজার টাকা দিতে রাজী হন। কিন্তু তিনি তাতে রাজী হননি।
ফজলু শেখের চাচাতো ভাই নাসির শেখ বলেন, আদালতে গিয়ে কীভাবে গরু ফেরতের আবেদন করতে হবে এ বিষয়ে পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই মোহাম্মদ আলী হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওনাদের আদালত থেকে গরু নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গরুগুলো বর্তমানে থানায় রয়েছে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, গরু ফেরত পেতে তাদের আদালতে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। টাকা চাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি টাকা চাওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে এসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এমএন/জিকেএস