আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি ৭ পয়েন্ট ৮ মিলিয়ন টিইইউস করতে ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে পুরোদমে কার্যকর করার বিষয়েও নিজের মত ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর, বে-টার্মিনাল এবং বন্দরের এনসিটির অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন বিডার চেয়ারম্যান। দুপুরে তিনি রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
Advertisement
ব্রিফিংয়ে আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাবের মতো গড়তে চাই, ফ্যাক্টরি বানাতে চাই। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ। তারা অর্থনীতির জন্য সম্পদ। তাদের ব্যবসায়ী বানানোর জন্য বিনিয়োগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। ঢাকাকে নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়। ঢাকা হচ্ছে বাংলালাদেশের অফিসিয়াল রাজধানী। কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে চট্টগ্রাম অনেক বেশি প্রসিদ্ধ। পর্তুগিজরা, তার আগে বৃটিশরা এসেছিলেন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রাম সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বপ্নকে সাকসেস করতে হলে চট্টগ্রামকে সাকসেস করতে হবে। শিল্পের ৩০-৪০ শতাংশ চট্টগ্রাম থেকে আসে। আমাদের বড় ইকোনমিক জোনগুলো চট্টগ্রামে। বিশেষ করে বড় বড় ইনিশিয়েটিভস, চায়না স্পেশাল ইকোনোমিক জোন হচ্ছে, মীরসরাই ইকোনোমিক জোন রয়েছে। আমরা একটি ফ্রি ট্রেড জোনের কথা বলছি, সেটাও চট্টগ্রামকে ঘিরে। সবগুলোর নেপথ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের বন্দরগুলো। বন্দরগুলোকে সাকসেস করতে না পারলে সবগুলো বিনিয়োগই লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে। বিনিয়োগকারীদের লজিস্টিক নিশ্চিত করতে হলে বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে হবে।
আশিক চৌধুরী বলেন, বিশ্বে বন্দর অপারেশনও একটি বড় ইন্ডাস্ট্রি। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত আমাদের লোকজন দিয়ে বৈশ্বিক বন্দর অপারেশন করা। বিশ্বের বন্দরগুলো টেকনোলজিতে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের বন্দর সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের বন্দরে যে অপারেটর রয়েছেন, শ্রমিক রয়েছেন, তাদের দক্ষ করতে হবে। তারাও যেন বিদেশি পোর্ট অপারেটরদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন।
ভিয়েতনামের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সক্ষমতার দিক থেকে আমরা ভিয়েতনামের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবো না। ভিয়েতনামে ৪৪টি বন্দর রয়েছে। তাদের হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ৪৭ মিলিয়ন টিইইউস। কিন্তু আমাদের এখন হচ্ছে ১ পয়েন্ট ২৯ মিলিয়ন টিইইউস। সেগুলো আমাদের নির্মাণাধীন সবগুলো পোর্টকে অ্যাকটিভ করলেও হবে ৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন টিইইউস। এজন্য আমাদের বন্দরকে ইফিসিয়েন্ট করার বিকল্প নেই।
Advertisement
বন্দরে দুর্নীতির বিষয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা ছাড়া দেশের দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য দেশের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এমডিআইএইচ/ইএ