পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পুরো ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হয়ে যশোর-খুলনা রেলপথে যাতায়াতের দূরত্বে সময় কমেছে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো এবং যশোর-বেনাপোল রেলপথে কমেছে চার ঘণ্টার মতো।
Advertisement
২০১৬ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুনে। প্রকল্পে মোট ব্যয় সাশ্রয় হবে ৬২১ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো বিল পরিশোধ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) পরিকল্পনা কমিশন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, প্রকল্পের ডাব্লিউডি-১ প্যাকেজের দুটি আইটেম যথা ‘প্রডিশনাল সাম’ ও ‘প্রাইস এডজাস্টমেন্টট’ থেকে সাশ্রয় হওয়া অর্থ ফিজিক্যাল কন্টিজেন্সি খাতের আওতায় সমন্বয় করে অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে ব্যয় করার প্রস্তাব চীনা এক্সিম ব্যাংকে পাঠানো হলে সম্মতি পাওয়া যায়নি। লোন এভেইলেবিলিটি পিরিয়ডের (ঋণ প্রাপ্ততার সময়কাল) মধ্যে প্রকল্পের সব কাজ শেষ করা ও এক্সিম ব্যাংক থেকে সম্মতি পাওয়ার পর সমুদয় বিল প্রদান করাই মূল চ্যালেঞ্জ।
Advertisement
আরও পড়ুন
পাঁচ রেল প্রকল্পে ব্যয় কমছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকাবিল পরিশোধের সময় বাড়াচ্ছে না চীন, চ্যালেঞ্জে ‘পদ্মা সেতু রেল’সবশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইআরডি, প্রকল্প দপ্তর ও চীনা এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ভার্চুয়াল সভা হয়। সভায় চীনা এক্সিম ব্যাংক জানায়, অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে সাশ্রয়কৃত ঋণের অংশ (প্রায় ৯৩ দশমিক ০৩ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করার প্রস্তাবটি তারা যাচাই-বাছাই করছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৮ হাজার ৬২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং প্রথম সংশোধিত আরডিপিপি (সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবনা) অনুযায়ী, প্রাক্কলিত ব্যয় বেড়ে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা করা হয়।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে সরকারি অংশে ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে ৫৪১ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ অংশে ব্যয় কমেছে ৮০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সার্বিকভাবে প্রকল্প ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে ৬২১ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।
Advertisement
ঢাকা-মাওয়া ও মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে প্রকল্পের অগ্রগতি যথাক্রমে ৯৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বাণিজ্যিকভাবে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে ট্রেন পরিচালিত হচ্ছে। ভাঙ্গা-যশোর অংশের অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর অংশে প্রায় ১১০ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি স্টেশন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করে সিগন্যালিংয়ের কাজও শেষ পর্যায়ে।
আরও পড়ুন
৩ ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়ার সুবিধা পেতে আরও অপেক্ষালোন এভেইলেবিলিটি পিরিয়ড (ঋণ প্রাপ্ততার সময়কাল) ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। এসময়ে পুরো কাজ শেষ করে বিল পরিশোধই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এরই মধ্যে ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ভবনের অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ ও টিটিপাড়াতে সিটিসি ভবনের নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। ভাঙ্গা জংশন স্টেশন ও টিটিপাড়া আন্ডারপাস কাজের জন্য আনুমানিক ব্যয় হবে ৩৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ডলার।
এমওএস/এমকেআর/জেআইএম