আইন-আদালত

ফাঁসির রায় দিতে হাসিনা-সিনহা গোপন মিটিং হয়েছিল

ফাঁসির রায় দিতে হাসিনা-সিনহা গোপন মিটিং হয়েছিল

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, কী করে মানুষকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একজন বিচারপতি গোপনে (সিক্রেট) আলোচনা করতে পারেন। আমরা এটি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে দেখিয়েছি। আর বলেছি ষড়যন্ত্র করতে পারেন, সবকিছুই করতে পারেন কিন্তু সেটা একসময় প্রকাশ পায়।

Advertisement

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনের শুনানিতে এসব কথা বলেন শিশির মনির।

শুনানি শেষে এ বিষয়ে রায়ের জন্য আগামী ২৭ মে দিন ঠিক করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ।

এস কে সিনহার বই-সংগৃহীত ছবি

Advertisement

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল ১০টার কয়েক মিনিট আগে শুনানি শুরু হয়। মাঝে আধাঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শুনানি চলে। শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। আদালতে আপিলকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম শুনানিতে অংশ নেন।

আরও পড়ুন

এটিএম আজহারকে আল্লাহ কুদরতি হাতে বাঁচিয়ে রেখেছেন মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আজহারের আবেদনের রায় ২৭ মে

শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিশির মনির। তিনি বলেন, এ মামলার বিচারে আইন ও প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা তার লেখা বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’র নবম অধ্যায়ে স্বীকার করেছেন, গত সরকারের সময়ে যখন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হবে, তখন মতদ্বৈধ হয়েছিল। এজন্য তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সিক্রেট মিটিং করে তাকে বোঝান এবং রাজি করান। সে সময় তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন।

শিশির মনির আরও বলেন, আমরা আদালতে দেখিয়েছি আপিল বিভাগের একজন জজ কী করে মানুষকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সিক্রেটলি দেখা করেন। মিটিংয়ে আলোচনা করে মানুষকে ফাঁসি দেওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন। তিনি তার বইয়ে নিজেই তা স্বীকার করেন।

Advertisement

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন আইনজীবী শিশির মনির

তিনি আরও বলেন, এস কে সিনহা নিজের বইয়ে এটাও স্বীকার করে লিখেছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যখন দেখা করি আলোচনা করেছি, এরইমধ্যে স্কাইপ কেলেঙ্কারি প্রকাশ হয়ে গেছে। তখন আমি বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে (ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান) ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি শুধু চান আপিল বিভাগে চলে আসার জন্য। আমি বলি একটা রায় দিয়ে আসুন, তাড়াতাড়ি শেষ করুন। কিন্তু যখনই তার দেখা হয় তখনই তিনি আমাদের বলেন যেন প্রধান বিচারপতি স্ট্যাটাসে তাকে ওপরে তুলে নিয়ে আসা হয়।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এজন্য আমি আজ আদালতে দেখিয়েছি, ষড়যন্ত্র করতে পারেন, অনেক কিছুই করতে পারেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সবই প্রকাশিত হয়।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম