ক্যাম্পাস

চবির ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, তিনজনের ৬ মাস বহাল

চবির ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, তিনজনের ৬ মাস বহাল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষককে মারধর, সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় ছাত্রীদের শাস্তি কমিয়ে আনা হয়েছে। আলোচিত ১০ ছাত্রী বহিষ্কারের ঘটনায় ৬ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ১ জনের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ ও ৩ জনের ৬ মাস করে বহিষ্কারাদেশ বহাল রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বুধবার (২১ মে) রাতে বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখা শিক্ষার্থী হলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আফসানা এনায়েত এমি। তিনি সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে থাপ্পড় দেওয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বহিষ্কারাদেশ বাতিল হওয়া ৬ শিক্ষার্থী হলেন- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মেরিন সায়েন্সেস ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী এলিসা স্বর্ণা চৌধুরী, ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফৌজিয়া আহমেদ পল্লী মজুমদার, একই বর্ষের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা বৃষ্টি, ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন পুতুল, ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ আশফিয়া নাহার এশা এবং একই বর্ষের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাইসারা জাহান ইশা। তাদের প্রত্যেককেই ২ বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

Advertisement

অন্যদিকে ৬ মাসের বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখা শিক্ষার্থীরা হলেন- ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী রওজাতুল জান্নাত নিশা, ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একই বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া মিথিলা এবং ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সিকদার। তাদের বহিষ্কারাদেশ ২ বছর থেকে কমিয়ে ৬ মাস করা হয়েছে।

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ৫৫৯তম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় যেসব ছাত্রীদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তাদেরকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আত্মপক্ষ সমর্থনের পর বিষয়গুলো পুনরায় তদন্তের ভিত্তিতে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সিনিয়র প্রক্টর অধ্যাপক ড. কোরবান আলীর গায়ে আঘাত করার কারণে একজনের স্থায়ী বহিষ্কার বহাল রয়েছে। বাকি বহিষ্কৃত ৯ জনের মধ্যে নিজ ভুলের লিখিত ও মৌখিক ক্ষমা চাওয়ায় ৬ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর ক্ষমা না চাওয়ায় ৩ জনের ৬ মাসের বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো। তারা অনেক সময় অনেক ভুল করে। শিক্ষার্থীরা ভুলের ক্ষমা চাইলে আমরা সেটি ইতিবাচকভাবেই দেখি। শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। তবুও কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, সেক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাস্তি দিতে হয়।

Advertisement

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের (বর্তমান নাম বিজয়-২৪ হল) নামফলক ও হলের সামনে কংক্রিট নির্মিত নৌকা ভাঙতে গেলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত আফসানা এনায়েত এমি সিনিয়র প্রক্টর অধ্যাপক ড. কোরবান আলীকে থাপ্পড় দেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং বাকি ৯ জনকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

আহমেদ জুনাইদ/এফএ/এমএস