চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। বিক্রি বাড়লেও কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ কমে গেছে।
Advertisement
বাড়তি জ্বালানি খরচ এবং সিমেন্টের দাম কমে যাওয়ায় কোম্পানিটির বিক্রি বাড়ান পরও মুনাফা কমেছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ। এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ ব্যয় সংকোচন ও কৌশলগত মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে।
কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভাশেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
কোম্পানিটির প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ৮৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার। আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয় ৮২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে প্রায় ২৬ কোটি টাকা।
Advertisement
বিক্রি বাড়ার পরও কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা প্রায় ৩৪ কোটি টাকা কমেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১৭৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয় ২১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি মুনাফা করেছে ১ টাকা ২০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি মুনাফা কমেছে ২০ পয়সা।
ব্যবসার এই পরিস্থিতি সম্পর্কে কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল চৌধুরী বলেন, লাফার্জহোলসিমের প্রধান দুইটি ব্যবসা খাত সিমেন্ট ও অ্যাগ্রিগেটস। উভয় খাতেই ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে যা বাজারে কোম্পানির শক্ত অবস্থান ও আমাদের পণ্যের প্রতি গ্রাহকদের অব্যাহত আস্থার প্রতিফলন। আমাদের দুইটি বিশেষায়িত পণ্য ‘ওয়াটার প্রোটেক্ট’ ও ‘ফেয়ার ফেস’ এই প্রান্তিকে ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা এই পণ্যগুলোর অনন্য বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতি।
তিনি বলেন, প্রথম প্রান্তিকে বাড়তি জ্বালানি খরচ এবং সিমেন্টের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের মুনাফা কমেছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় আমরা ব্যয় সংকোচন ও কৌশলগত মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছি। উদ্ভাবন এবং পণ্যের বৈচিত্র্যকরণে আমাদের অব্যাহত উদ্যোগগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, কোম্পানির টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ‘জিওসাইকেল’ এর মাধ্যমে প্রথম প্রান্তিকে আমরা ১০ হাজার টনের বেশি বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করেছি, যার মাধ্যমে প্রায় শতকরা ১০ ভাগ জীবাশ্ম জ্বালানি সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে। কোম্পানির গ্রিন গ্রোথ অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে জিওসাইকেল। বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা ও সামনের দিনগুলোতে ভালো ফলাফল উপহার দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এ ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।
কোম্পানিটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ২৫ পয়সা, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৬ টাকা ১ পয়সা।
অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ২ টাকা ৯৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ৯৫ পয়সা।
এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস