দেশজুড়ে

হালদার পাড়ার ভরসা বাঁশের সাঁকো

হালদার পাড়ার ভরসা বাঁশের সাঁকো

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী নদী ইছামতি। ভারত ও বাংলাদেশকে পৃথক করেছে এই নদী। উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নে ইছামতি নদীর বড় অংশ বহমান। নদীর পেটে হালদার পাড়া যেন এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। তিন পাশে নদী হওয়ায় গ্রামে প্রবেশের একমাত্র উপায় বাঁশের সাঁকো। বহুকাল ধরে হালদার পাড়ার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার হচ্ছেন।

Advertisement

সরেজমিন দেখা গেছে, শ্রীনাথপুর হালদার পাড়ার তিন পাশে ইছামতি নদী। পশ্চিমে কেবল ভারতীয় স্থল সীমান্তের কাঁটাতার। হালদার পাড়ায় প্রবেশের জন্য ইছামতি নদী পার হওয়ার বিকল্প নেই। তবে ইছামতি নদী পার হয়ে পাড়ায় প্রবেশের জন্য নেই কোনো সেতু বা সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার হন। ফল, ফসল ও ভারী জিনিসপত্র বহনেও চরম ঝুঁকিতে পড়েন হালদার পাড়ার বাসিন্দারা।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়েই স্কুলে যেতে হয় শিশু শিক্ষার্থীদের। বর্ষাকালে নদীতে পানি বেড়ে গেলে দেখা দেয় আতঙ্ক। বিভিন্ন সময় সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় ঘটে দুর্ঘটনা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ইছামতি নদীতে একটি সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন গ্রামের লোকজন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

Advertisement

পার্শ্ববর্তী মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ (৬০)। এ প্রতিবেদককে সাঁকোর ছবি তুলতে দেখে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘ছবি তুলে আর কী করবেন! মাঝেমধ্যেই লোকজন এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু আজও আমাদের সেতু হলো না। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পায়। বর্ষাকালে নদীতে পানি বেড়ে গেলে বয়স্ক, নারী ও শিশুরা চলাফেরা করতে পারে না।’

হাফিজুল ইসলাম (৪৫) নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতু না থাকায় হালদার পাড়ায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। রাস্তাঘাট হয়নি।বাসিন্দারা ঘরবাড়ি করতে পারছেন না। গ্রামে ভারী মালামাল আনা যায় না।’

হালদার পাড়ার বাসিন্দা রতন হালদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পায়। নদী পার হতে গিয়ে বাচ্চারা অনেক সময় পানিতেও পড়ে যায়। বাঁশের সাঁকো পার হওয়া তো কঠিন। সরকারের কাছে আবেদন, আমাদের একটা ছোট্ট সেতু হলেও যেন তারা বানিয়ে দেন।’

এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

মহেশপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. খালিদ হাসান বলেন, বছরের পর বছর একটি গ্রামের মানুষ একটিমাত্র সেতুর জন্য মানবেতর জীবনযাপন করছেন, এটা খুবই কষ্টকর। তবে আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি জানা ছিল না। শিগগির এ বিষয়ে কাজ করবো।

এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার বলেন, মহেশপুরে আমি নতুন যোগদান করেছি। হালদার পাড়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহজাহান নবীন/এসআর/জেআইএম