দেশজুড়ে

‘প্রথমে ফেল করানো হয়, এরপর দালালকে টাকা দিলেই সন্ধ্যায় পাস’

‘প্রথমে ফেল করানো হয়, এরপর দালালকে টাকা দিলেই সন্ধ্যায় পাস’

অতিরিক্ত অর্থ ও দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না। মেলে না কোনো সেবা। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ পাবনা বিআরটিএ অফিসের বিরুদ্ধে।

Advertisement

এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বুধবার (৭ মে) দুপুরে পাবনা বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযানে কিছু অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলা জানান দুদকের পাবনা-সিরাজগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর।

তিনি বলেন, অভিযানের শুরুতে আমরা বিআরটিএ কার্যালয়ে যাওয়া গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দেওয়া তথ্যমতে- এই অফিসে দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আবার ফেল করলেও দালালের মাধ্যমে টাকা দিলেই পাস করিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন আবেদনে দালালের মাধ্যম টাকা না দিলে গ্রাহকদের নানা অজুহাতে ঘুরিয়ে হয়রানি করা হয়।

Advertisement

দুদকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা একজন দালালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, তিনি টাকা নিয়ে কাজ করেন বলে অকপটে স্বীকার করেছেন। অন্যান্য অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই চলছে। অভিযান শেষে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

ঈশ্বরদী উপজেলার জয়নগর থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যাওয়া রবিন বলেন, লাইসেন্সের জন্য আবেদনের পর পরীক্ষা দিয়েছি। আমাকে ফেল করানো হয়। এরপর বিকেলে দালালের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা দিয়েছি, সন্ধ্যায়ই আমাকে পাস করিয়ে দেয়। এভাবেই হয়রানি করা হয় আমাদের। দালাল আর টাকা ছাড়া এই অফিসে কিচ্ছু হয় না।

বাসচালক আব্দুল হাকিম বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছর ভারী যান চালাই। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বয়সও অনেক। লাইসেন্সের একটি কাজের জন্য বার বার ঘুরছি। এই এক কাজ নিয়ে যদি দিনের পর দিন ঘুরি তাহলে কাজটা করবো কখন? এগুলোর সমাধান হওয়া উচিত।

মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে আসা তপু জানান, ২০২৩ সালে মালিকানা পরিবর্তনের আবেদন করেছি। বার বার এসে ঘুরি, অফিসের এরা বলে নথি পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে এখনো আমার কাজ হয়নি। ঢাকায় চাকরি করি, চাকরি ফেলে এ নিয়ে এত ঘোরা সম্ভব? এভাবেই হয়রানির শিকার হয় এখানে আসা গ্রাহকরা।

Advertisement

আলমগীর হোসাইন নাবিল/জেডএইচ/এএসএম