ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের আবিষ্কৃত বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক সাব-অরবিটাল রকেট ‘বিদ্রোহী’ উন্মোচন করেছে ধূমকেতু এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজিস লিমিটেড (ধূমকেতু-এক্স)। যা দেশের মহাকাশ-প্রযুক্তি উন্নয়নের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর টাউনহল অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জনসাধারণের জন্য এই রকেট প্রদর্শনী করা হয়।
এসময় আয়োজকরা জানান, দেশের প্রথম বাণিজ্যিক সাব-অরবিটাল রকেট ‘বিদ্রোহী’ পর্যায়ক্রমে দেশের ৮টি বিভাগে প্রদর্শন করা হবে। এই রকেটের মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণাসহ বাণিজ্যিকভাবে গবেষণা করা যাবে। এটি ব্যবহার করে দুই বছরের মধ্যে ডিফেন্স সিস্টেম বদলে দেওয়া সম্ভব। এটি বাংলাদেশের মহাকাশ উন্নয়নের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। যা জাতির প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও মহাকাশ গবেষণায় বাংলাদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করে।
এসময় জনসম্মুখে আনা এই প্রদর্শনীতে রকেটটির অত্যাধুনিক ডিজাইন ও বৈশিষ্ট্যসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে জানা যায়, ৬ দশমিক ১ মিটার উচ্চতাসম্পন্ন বিদ্রোহী রকেট সাব-অরবিটাল মহাকাশে পৌঁছানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা ৩৫-৫০ কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম। রকেটটি বহন করবে ১০টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, ৫টি শিক্ষার্থী কিউবস্যাট, ২০টি বাণিজ্যিক পে-লোড, ৫টি জাতীয় প্রতীক ও একটি গোপন পে-লোড। রকেটে সলিড ও লিকুইড ফুয়েল ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়াও প্রথম স্তরের জন্য অগ্নি বিনা এসআরবি এবং দ্বিতীয় স্তরের জন্য বোসন লিকুইড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।
Advertisement
ধুমকেতু-এক্সের সিইও নাহিয়ান আল রহমান (ওলি) বলেন, আজকের দিনটি শুধু ধূমকেতু-এক্সের জন্য নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিদ্রোহী রকেট দিয়ে আমরা শুধুমাত্র একটি রকেট উৎক্ষেপণ করছি না, বরং বাংলাদেশে মহাকাশ গবেষণা ও রকেট প্রযুক্তির ভবিষ্যতের জন্য একটি জাতীয় আন্দোলন শুরু করছি। সাব-অরবিটাল মহাকাশে পৌঁছানো, বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণা, বৈজ্ঞানিক যন্ত্র, শিক্ষার্থী কিউবস্যাট এবং বাংলাদেশের ২০০ মিলিয়ন নাগরিকের নাম সম্মানার্থে খোদাই করা হবে। গবেষণা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, এখন আমাদের মূল ফোকাস উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি।
প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ। তিনি বলেন, এই রকেট প্রদর্শনীর বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য আনন্দের একটি বিষয়। বিজ্ঞানের ওপর তারা যে কাজ করছে, তা আমাদের গবেষণা থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তনসহ সব ক্ষেত্রে এই আবিষ্কার কাজে লাগবে। আমরা চাই, তাদের এই কাজ দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাক।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন/এমএস
Advertisement