স্ত্রীকে মৌখিকভাবে ‘তালাক’ বলে আট মাস বয়সী নিজের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে। এদিকে সন্তানকে ফিরে পেতে ওই মা থানা থেকে শুরু করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালত শিশুটিকে খুঁজে পেতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দায়।
Advertisement
এর আগে ২৮ এপ্রিল ফরিদপুর আদালতে মামলা করেন ওই শিশুর মা পপি বেগম। মামলায় স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম ও সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
এলাকাবাসী, ভুক্তোভোগী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে পপি বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কলহ শুরু হয় তাদের। তাদের সংসারে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। এরমধ্যে গত পাঁচ মাস আগে মৌখিকভাবে তালাক বলে ওই শিশুকন্যাকে তার মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন কাইয়ুম বিশ্বাস। পরে শিশুটিকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।
শিশুর মা পপি বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন স্বামী। একপর্যায়ে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে জোর করে আমার আট মাসের শিশু তানহাকে রেখে দেন তিনি। পরে তার বাবা কাইয়ুম বিশ্বাস সন্তানকে শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।
Advertisement
শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ায় অভিযুক্ত বাবা কাইয়ুম বিশ্বাস
শিশুর মা কান্না করতে করতে বলেন, আমার মেয়েকে এক নজর দেখার জন্য রাতে ঘুমাতে পারি না, খেতে পারি না। যার কাছে মেয়েকে বিক্রি করা হয়েছে তার এবং তার মায়ের পা পর্যন্ত জড়িয়ে ধরে বুকের মানিককে ফেরত চেয়েছি। কিন্তু তারা দেননি। তারা বলেছেন দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের মোবাইল নম্বরে কল করলে অপর একজন রিসিভ করেন। তিনি মিতার স্বামী পরিচয় দেন এবং ব্যস্ত আছেন বলে কল কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী বলেন, ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করেছেন। আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন। অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ কাজ করছে। খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/এএসএম