‘দ্রুত নির্বাচন না হলে দেশ ভালোভাবে চলবে না। দেশ ভালোভাবে চলতে হলে দ্রুত নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই।’
Advertisement
কথাগুলো বলছিলেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে ঢাকায় আসা ইকবাল করিম নামের এক বিএনপি সমর্থক। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে গতকাল সোমবার ঢাকায় আসেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ৬টা থেকে তিনি বিমানবন্দর এলাকায় অপেক্ষায় ছিলেন খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ইকবাল করিমের। তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হবে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে সরে যাওয়া। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এবং খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।’
একই সুরে কথা বলেন ময়মনসিংহ থেকে আসা নাসির উদ্দীন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। অনেক বছর দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আশা করছি এ সরকার দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন খালেদা জিয়া।’
Advertisement
হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনে কথা হয় পানি বিক্রেতা শ্যামলী বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আইবে এজন্য এত লোক আজ। আমরা বিএনপির লোক, বিএনপিরে ভোট দিমু।’
রাজধানীর ক্ষিলখেত এলাকার চা দোকানি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এয়ারপোর্ট ও এই রাস্তায় এত লোক আগে কখনো হয়নি। খালেদা জিয়া একজন জনপ্রিয় নেত্রী, তার জন্যই এত মানুষ এসেছে। তিনি আমাদের দেশের একমাত্র নেত্রী, তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।’
বনানী-গুলশান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রিকশা চালান পঞ্চাশোর্ধ জলিল মিয়া। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘গত তিনবার এমপির (জাতীয় সংসদ নির্বাচন) ভোট দিতে গ্রামে যাইনি। শুনতাম আমার ভোট নাকি দিয়া দিছে। এবার মনে করছি ভোট আইলেই গ্রামে যামু এবং বিএনপিকে ভোট দেবো। বিএনপি সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে। আবারও বিএনপিকে ভোট দিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাচিত করুম।’
মহাখালী রেলগেট এলাকার চা বিক্রেতা বাবু শেখ বলেন, ‘সারাদেশে সব থেকে বেশি সমর্থক আছে বিএনপির। কিন্তু এতদিন অনেকেই ভোট দিতে পারেনি। এবার ভোট দিয়ে খালেদা জিয়াকে আবারও প্রধানমন্ত্রী বানাতে চাই।’
Advertisement
রিকশাচালক নাজির মিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনা ৮ মাস হলো পালাইয়া গেছেন। তার জন্য কোনোদিন আজকের মতো এত মানুষ হয়নি। খালেদা জিয়া অনেক ভালো মানুষ, এজন্য আজ লাখ লাখ মানুষ হইছে। খালেদা জিয়াকেই ভোট দিমু।’
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিএনপি নেত্রী সাধারণত গাড়ির সামনে না বসলেও এদিন তাকে সেখানে আসন নিতে দেখা গেছে। পেছনের আসনে বসেন তার দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।
এসময় সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। বিএনপি নেত্রী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন।
এসময় নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগান দেন।
ফিরোজায় খালেদা জিয়া পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান তার মেজ বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, জুবাইদা রহমানের বড় বোন শাহীনা জামান বিন্দু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এছাড়া বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এফ এম সিদ্দিক, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার জন্য গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে ‘ফিরোজা’ আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত করার কথা বিএনপির তরফে জানানো হয়েছিল।
টিটি/কেএসআর/এএসএম