রাজনীতি

খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত: জি এম কাদের

খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত: জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, দীর্ঘদিন দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকার পর বেগম খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা আনন্দিত। তিনি সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সৃষ্টির মাধ্যমে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলবেন এবং দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা করি।

Advertisement

মঙ্গলবার (৬ মে) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

‘দেশ আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে’ উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অস্থিতিশীল রাজনীতি দেশকে এক ভয়াবহ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করছে। পরস্পরের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে বিভক্তি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির প্রসার ঘটছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশ প্রতিদিন এক সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে, বেগম খালেদা জিয়ার মতো বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, জনগণের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সৃষ্টির মাধ্যমে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলবেন ও দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, বলে প্রত্যাশা করি। আমরা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

Advertisement

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রায় চার মাস চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ দেশে ফিরেছেন। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ রাজকীয় বিমান (অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে এসেছেন তার দুই পুত্রবধূ—ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। বিগত বছরগুলোতে শামিলা রহমান বিভিন্ন সময় দেশে অবস্থান করলেও ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশত্যাগের পর এই প্রথম দেশে ফিরতে পারলেন জুবাইদা রহমান।

খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে আজ ভোর থেকে বিমানবন্দর এলাকায় সড়কের দুপাশের ফুটপাতে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনানী, খিলক্ষেত ও বিমানবন্দরের সড়কের দুপাশে অবস্থান নেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থক ও জনতার ভিড় ঠেলে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান খালেদা জিয়া।

নেতাকর্মীদের অবস্থান ঘিরে গুলশানে বাসভবনের সামনে, বনানী-খিলক্ষেত সড়কে ও বিমানবন্দর এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা, পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়।

Advertisement

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। পরদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ২টা ৫৮ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে খালেদা জিয়াকে বহনকারী রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। এরপর তাকে সেখান থেকে সরাসরি ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ নিয়ে ভর্তি করা হয়। ১৭ দিনের ক্লিনিক-পর্ব শেষে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে দেশে ফিরলেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।

এমএমএআর/এমএস