প্রথমেই বলে রাখি, আজকের লেখাটা পড়ে যদি কেউ ওজন কমাতে চাওয়া ভুলে যান, আমি দায়ী না! আজ ৬ মে, আন্তর্জাতিক ডায়েট না করার দিন। মানে? মানে হলো আজকে ভাতের সঙ্গে একটা আলু ভাজি বেশি চলবে, বিরিয়ানির পরে মিষ্টি খেলে কেউ বাঁকা চোখে তাকাবে না, আর চা-সিংগারা তো মাস্ট!
Advertisement
আসলে এই দিনটা শুধুই পেটপুজোর জন্য নয়, এর একটা গভীর সামাজিক বার্তাও আছে। মূলত শরীর নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা, সমাজের চাপ আর তথাকথিত ‘পারফেক্ট’ ফিগারের নামে যে মানসিক নিপীড়ন চলে, তার প্রতিবাদেই দিনটা উদযাপন করা হয়। শরীর যেমন-তেমন, মনটা ভালো থাকুক এই হোক স্লোগান।
তবে দিনটা নিয়ে সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত কারা জানেন?না, ডায়েটিশিয়ানরা না বরং ওয়াটার লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ফুচকাওয়ালারা, কাঠির জিলাপি বিক্রেতারা আর মোড়ের চাইনিজ দোকানদাররা! কারণ আজকের দিনে যারা রাত ১২টার পর ‘কাল থেকে ডায়েট করবো’ বলে গলা ফাটান, তারাও বলেন, ‘আরে আজকে একটু খেয়েই ফেলি, আজ তো ডায়েট না করার দিন!’
ফেসবুকে ঢুকলেই দেখবেন একপাশে কেউ একজন লিখেছে, ‘বি কাইন্ড টু ইউর বডি', আরেক পাশে কেউ চিংড়ি মালাইকারি আর বাসমতি ভাতের ছবি পোস্ট দিয়ে লিখেছে, ‘সেল্ফ লাভ বিংস উইথ ফুড’।
Advertisement
আমার এক বন্ধু তো আজ সকালে বলল, ‘এই দিনটা আমাদের জন্য ঈদ-পূজা সব একসঙ্গে! মা যখন বলল বেশি খেয়ো না, তখন আমি গম্ভীর মুখে বললাম, এটা আন্তর্জাতিক দিবস আম্মা, গ্লোবাল কিছু পালন করছি।’ মা আর কিছু বলেনি।
আসলে আমরা এমন এক সমাজে বাস করি, যেখানে শরীরের মাপই যেন মানসিক সুখের মাপকাঠি। কেউ মোটা হলে বলে ‘কম খা’, কেউ চিকন হলে বলে‘খাও না কেন?’ এই যে দেহ নিয়ে চিরন্তন বিশ্লেষণ তার বিরুদ্ধে এক চিমটি বিদ্রোহ হলো এই দিনটা।
আজকের দিনটা মনে করিয়ে দেয়, নিজেকে ভালোবাসা মানে শুধু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে শরীর দেখা না, বরং এক প্লেট পোলাও আর গরুর মাংস খেয়ে চোখ বন্ধ করে আহা! বলা।
তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়েটের নামে শুধু লেটুসপাতা, দই আর পানি দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন, আজ একটু নিজেকে ছাড় দিন। আজ একটু ভাত-ভর্তা খান, পেটপুরে হেসে খান। কারণ জীবন এত ছোট, আর খাওয়ার তালিকা এত বড়!
Advertisement
ওজন কমাতে পারবেন সারাবছর, কিন্তু আজকের আনন্দটা বারবার আসে না। আজ খাও, কাল আবার ভাবা যাবে!
আরও পড়ুন
গরমে এসি ছাড়াই ঘর রাখুন ঠান্ডা মাইক্রোচিটিং কি সম্পর্কের নতুন সমস্যাকেএসকে/এমএস