দেশজুড়ে

লামিয়ার মায়ের মানসিক পুনর্বাসনে আদালতের মানবিক আদেশ

লামিয়ার মায়ের মানসিক পুনর্বাসনে আদালতের মানবিক আদেশ

পটুয়াখালী দুমকি উপজেলার আলোচিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার লামিয়া আক্তারের আত্মহত্যার পর তার মায়ের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মোসা. রুমার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় পেশাদার কাউন্সেলিং নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৫ মে) দুপুরে পটুয়াখালীর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইউসুফ হোসেন এ মানবিক আদেশ প্রদান করেন।

Advertisement

আদালত সূত্রে জানা যায়, স্কুলছাত্রী মোসা. লামিয়া আক্তার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। এরইমধ্যে অভিযুক্ত দুইজন কিশোর গ্রেফতার হয়ে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রয়েছেন।

কিন্তু মামলার তদন্ত চলাকালেই গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার আদাবর থানার একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ভিকটিম লামিয়া। বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে লিখিতভাবে অবহিত করেন।

আরও জানা যায়, লামিয়ার বাবা ছিলেন জুলাই আন্দোলনের একজন শহীদ। স্বামীর মৃত্যু, মেয়ের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়া এবং অবশেষে আত্মহত্যার মতো পরপর ঘটনার ফলে লামিয়ার মা মোসা. রুমা চরম মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন। ২৭ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তিনি দুই নাবালক সন্তানসহ অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

Advertisement

এই প্রেক্ষাপটে আদালত তার আদেশে বলেন, ‘মোসা. রুমার জীবনের ওপর দিয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিয়োগান্তক ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন, যা সহজেই অনুমেয়। তাই তার জন্য কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপির ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।’

আদেশে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক), পুলের হাট, যশোরে কর্মরত অথবা অন্য কোনো উপযুক্ত স্থানে কর্মরত সাইকোসোশ্যাল কাউন্সেলরের মাধ্যমে মোসা. রুমার মানসিক কাউন্সেলিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা করেন।

কাউন্সেলিং সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট কাউন্সেলরের প্রত্যয়নপত্রসহ বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদেশের অনুলিপি মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর; জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পটুয়াখালী; পুলিশ সুপার, পটুয়াখালী; তত্ত্বাবধায়ক, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, যশোর; ওসি, দুমকি থানা এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা, দুমকি-সহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/জেআইএম